লক্ষ্মীপুরে রাতের আঁধারে সেতু ভেঙে দোকান নির্মাণ
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে রাতের আঁধারে বাঁশের সেতু ভেঙে চলাচলের পথ বন্ধ করে দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজন এমন অভিযোগ করেছেন। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রামগঞ্জ-সোনাপুর খালের ওপর কাঠের সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়। পরে খালের পূর্ব পারে কলাবাগান এলাকায় ২৫ থেকে ৩০ জনের উপস্থিতিতে একটি দোকানঘর তোলা হয়েছে।
সেতু ভেঙে ফেলায় বিপাকে পড়েছে খালের পশ্চিম পারের শতাধিক পরিবার। তাদের দেড় থেকে দুই কিলোমিটার ঘুরে স্থানীয় বাজারে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ফজলে এলাহি বলেন, ‘কলাবাগান এলাকার লোকজন পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে সেতুটি দিয়ে চলাচল করছিলেন। হঠাৎ গতকাল গভীর রাতে লোকজন নিয়ে কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন সেতুটি করাত দিয়ে কেটে ভেঙে ফেলেন। আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। পরে পুলিশ চলে গেলে তাঁরা পুরো সেতুটি ভেঙে ফেলে একটি দোকানঘর নির্মাণ করেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার শতাধিক পরিবারের লোকজন।’
আজ রোববার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, রামগঞ্জ-সোনাপুর সড়কের কলাবাগান এলাকার পশ্চিম পারে সেতুর প্রবেশমুখে টিনের দোকানঘর তোলা হয়েছে।দোকানঘরটির পশ্চিম পাশে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি সেতুটি টুকরা টুকরা করে কেটে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, রামগঞ্জ-সোনাপুর রাস্তার পশ্চিম পাশের জমি জেলা পরিষদের। এর পশ্চিমে রামগঞ্জ-সোনাপুর খাল। খালের পশ্চিম পারের কলাবাগান ও রতনপুর এলাকার লোকজন চলাচলের জন্য খালের ওপর একটি কাঠের সেতু বানিয়েছিলেন। পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে এলাকার লোকজন কাঠের সেতুটি দিয়ে চলাচল করে আসছিলেন। সেই সঙ্গে সুপারি, ধানসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য কাঠের সেতুটি দিয়ে পারাপার করা হচ্ছিল। সেই সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে রামগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘জমিটি ২০১০ সালে আমি জেলা পরিষদ থেকে লিজ নিয়েছি। কিন্তু দোকানঘর নির্মাণ করিনি। খালি থাকার কারণে ওই স্থানে প্রথমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন কয়েকজন লোক। পরে তাঁরা কাঠ দিয়ে সেতু তৈরি করেন। এখন আমার লিজের জমি আমি দখল করেছি।’
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দোকানঘর নির্মাণ করা যায় না। চলাচলের জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ, তা খতিয়ে দেখতে একজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যাবেন। জমি লিজ দেওয়া হলে প্রয়োজনে জনস্বার্থে তা বাতিল করা হবে।