একই দিন একই স্থানে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সমাবেশের ডাক, উত্তেজনা

টাঙ্গাইল জেলার মানচিত্র

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ ‘পৃথক দুটি ব্যানারে’ বৃহস্পতিবার একই স্থানে একই সময়ে সমাবেশের আহ্বান করেছে। এক পক্ষে রয়েছেন বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘নৌকা’ প্রতীকের সমর্থকেরা। অপর দিকে সক্রিয় রয়েছেন ‘ঈগল’ প্রতীকের সমর্থকেরা। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে চলছে উত্তেজনা।

ঈগল প্রতীকের সমর্থকেরা টাঙ্গাইলের সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সমাবেশ আহ্বান করেছেন। তাঁদের দাবি, ধর্ষণ মামলার আসামি শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিকে গ্রেপ্তার ও বিচারের।

অপর দিকে জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে একই দিন একই সময় শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এর সমর্থনে রয়েছেন বিগত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা। এর নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বালা মিয়া, ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনির ও ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান ওরফে আমিন।

তানভীর হাসান টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া তাঁর ভাই।

টাঙ্গাইলের সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে ঈগল প্রতীক সমর্থিতদের নেতৃত্বে রয়েছেন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম সিরাজুল হক, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহজাহান আনছারী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহেল।

মেয়র সিরাজুল হক বলেন, গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনি একাধিক ধর্ষণ মামলার আসামি। তাঁর কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাই তাঁকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁকে সব সামাজিক সংগঠন থেকে অব্যাহতি এবং গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। তিনি জানান, শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান ব্যবহারের অনুমতি দেয় পৌরসভা। কয়েক দিন আগেই সচেতন নাগরিক সমাজকে বৃহস্পতিবার সমাবেশ করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং সেই চিঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘সচেতন নাগরিক সমাজের সমাবেশ পণ্ড করার জন্য শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে পাল্টা সমাবেশ ডাকা হয়েছে। আমরা সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের প্রতি একাধিক সংসদ সদস্যের সমর্থন রয়েছে। সমাবেশের ওপর প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা দিলে পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রহমান জানান, একটি কুচক্রী মহল বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনে অবৈধ হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। তারা শ্রমিকদের নানাভাবে অত্যাচার, নির্যাতন করছে। এর প্রতিবাদে সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। এতে সারা জেলা থেকে ফেডারেশনভুক্ত শ্রমিকেরা অংশ নেবেন। তিনি বলেন, সমাবেশের অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পৌরসভায় আবেদন করা হয়েছে। তাঁদের সমাবেশে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য তানভীর হাসানসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় অনেক নেতাই অংশ নেবেন।

বুধবার বিকেলেও উভয় পক্ষ সমাবেশের প্রচারণা চালিয়েছে। তারা তাদের সমর্থকদের সমাবেশে উপস্থিত নিশ্চিত করতে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে এবং আশপাশের উপজেলায়ও ছিল তৎপর।

দুই পক্ষের সমাবেশের বিষয়ে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইও-১ পুলিশ পরিদর্শক হারেছ আলী বলেন, বৃহস্পতিবার পৌর উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।