হাটের জমি দখল করে ছাত্রলীগের কার্যালয় নির্মাণ

নাটোরের সিংড়া উপজেলার তেমুক নেওগাঁ হাটের জমি দখল করে দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রৌওনক হাসানের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে
ছবি: মুক্তার হোসেন

এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে নাটোরের সিংড়া উপজেলার তেমুক নওগাঁ হাটের জমি দখল করে দলীয় কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত রৌওনক হাসান সিংড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। কার্যালয়টির নির্মাণকাজ শেষ হলে বাজারের লোকজনের পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি পাড়ার লোকজনের চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রৌওনক হাসান ওরফে হারুন শুক্রবার সকাল থেকে বাজারের একটি জায়গায় তাঁর কার্যালয় নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। সেখানে শ্রমিকেরা বাঁশ-কাঠ দিয়ে অবকাঠামো নির্মাণ করছেন। শহীদ মিনার ঘেঁষে নির্মাণাধীন এ অবকাঠামোর পেছনে একটি পাকা বিপণিবিতান আছে। এর এক পাশ দিয়ে বাদ্যকরপাড়ায় যাতায়াতের রাস্তা। কার্যালয়টির নির্মাণকাজ শেষ হলে বিপণিবিতানের লোকজনের পাশাপাশি বাদ্যকরপাড়ার লোকজনের চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে।

স্থানীয় তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন বলেন, হাটের জায়গা দখল করে কার্যালয় নির্মাণে সাধারণ জনগণের চরম সমস্যার সৃষ্টি হবে। এ বিষয়ে নিষেধ করেও কোনো কাজ হয়নি। আর তাঁর ইউনিয়নে কোনো আঞ্চলিক কার্যালয়ের দরকার নেই। কোনো ছাত্রলীগ নেতার কার্যালয় দরকার হলে তাঁর এলাকায় গিয়ে ব্যক্তিগত জায়গায় করার পরামর্শ দেন তিনি।

তেমুক নওগাঁ বাজার কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক পঙ্কজ কুমার সাহা বলেন, ছাত্রলীগ নেতা হারুন তাঁর কার্যালয় নির্মাণ করছেন বলে তিনি শুনেছেন। জনগণের অসুবিধা করে হাটের জায়গায় কোনো দলীয় বা ব্যক্তিগত কার্যালয় নির্মাণ করা উচিত নয়।

শুক্রবার সকালে তেমুক নওগাঁ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের শহীদ মিনার ঘেঁষে নয়জন শ্রমিক বাঁশ দিয়ে ঘর নির্মাণ করছেন। নির্মাণকাজে নিয়োজিত শ্রমিক খরমকুড়ি গ্রামের শ্রীনিবাস বলেন, এটা একটি ক্লাবঘর। ছাত্রলীগ নেতা রৌওনক হাসানের নির্দেশে তাঁরা এটি তৈরি করছেন।

রৌওনক হাসান বলেন, সেখানে তাঁর গ্রামের বাড়ি। এটা ছাত্রলীগের কার্যালয় নয়। স্থানীয় নেতাদের জন্য বাজারে একটি আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণ করা হচ্ছে। এটা নির্মাণের ফলে কারও কোনো সমস্যা হবে না।

স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা ও ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভীম কুমার সাহা বলেন, প্রতিদিন সকালে এখানে দুধের হাট বসে। পাশাপাশি বাজারে কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ার ভ্যানগাড়িগুলো এখানে রেখে মালামাল ওঠানো-নামানো হয়। এখানে ঘর নির্মিত হলে পেছনের পাকা বিপণিবিতানে বেচাকেনা কমে যাবে এবং বাদ্যকরপাড়ার প্রায় ২০ থেকে ২৫টি পরিবারের লোকজনের চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে বিপণিবিতানের মালিক বিপুল কুমার সাহা বলেন, তাঁর বিপণিবিতানের সামনে জবরদখল করে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ঘর নির্মাণ করছেন। তিনি নিষেধ করায় তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল ইমরান বলেন, খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।