গাজীপুরে ৮ পোশাক কারখানা বন্ধ, ৩০টিতে ছুটি ঘোষণা
শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে গাজীপুরে আটটি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে ৩০টি পোশাক কারখানায়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘোষণা দেয় সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ।
শ্রম আইন-২০০৬ এর ১৩ (১) ধারাতে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বা বিভাগে বেআইনি ধর্মঘটের কারণে মালিক উক্ত শাখা বা প্রতিষ্ঠান আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারবেন; এমন বন্ধের ক্ষেত্রে ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকেরা কোনো মজুরি পাবেন না।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও কারখানা মালিক সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন দাবিতে গত কয়েক দিন গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। বিক্ষোভের জেরে অনেক সময় কারখানায় ভাঙচুর, কারখানার কর্মকর্তাদের মারধরসহ বিভিন্ন বিশৃঙ্খলায় জড়িয়ে পড়ছেন। আর এ সুযোগে কিছু বহিরাগত কারাখানায় লুটপাট বা অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছেন। এতে কারখানা কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বা ঝামেলা হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে কারাখাগুলোর কোনোটিতে সাধারণ ছুটি বা কোনোটি বা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে যেকোনো ঝামেলা এড়াতে মহানগর ও মহানগরের বাইরে সব মিলিয়ে ৮টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও ৩০ কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। অনেক সময় একটি কারখানায় ঝামেলা হলে ওই কারখানার শ্রমিকেরা আশপাশের আরও কারখানায় গন্ডগোল করার চেষ্টা করেন। এসব কারণে বিশৃঙ্খলা এড়াতে কিছু কারখানা কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা সব সময় কারখানাগুলোর তদারক করছি, মালিকপক্ষকে সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তত রয়েছি।’
অনেক সময় একটি কারখানায় ঝামেলা হলে ওই কারখানার শ্রমিকেরা আশপাশের আরও কারখানায় গন্ডগোল করার চেষ্টা করেন। এসব কারণে বিশৃঙ্খলা এড়াতে কিছু কারখানা কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত (ছুটি ও বন্ধ ঘোষণা) নিয়েছে।মোহাম্মদ সারওয়ার আলম, গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল বুধবার আগস্ট মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর নগরের ভবানিপুর এলাকায় বিক্ষোভ করছিলেন বেক্সিমকো গ্রুপের একটি কারখানার শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে তাঁরা আশপাশের কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে কিছু শ্রমিক বিগবস নামের একটি কারখানায় আগুন দেয়।
একইভাবে গতকাল দিনভর শ্রমিক অসন্তোষ চলে টঙ্গী, শালনা ও কাশিমপুরের বিভিন্ন কারখানায়। এ সময় কারখানায় ভাঙচুর এবং বহিরাগতদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এসব কারণে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কারখানা বন্ধ বা ছুটির সিদ্ধান্ত নেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। বেলা আড়াইটায় এই প্রতিবেদন লেখা সময় কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।