মনোনয়ন নিয়ে যে বিভেদ তৈরি হয়েছে, তা এখন ক্রমশ সংঘাতে রূপ নিচ্ছে। এটাকে কীভাবে দেখছেন?
গোলাম আব্বাস চৌধুরী: প্রথমত, আমি এটাকে বিভেদ মনে করি না। কারণ, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। সেখানে একটি নির্বাচনে অনেক প্রার্থী থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। যেহেতু দলের মনোনয়ন একজনই পান, তাই যাঁরা পান না তাঁদের মধ্যে কিছুটা মান-অভিমান থাকে। এটা চূড়ান্ত কিছু না। এখানে মনোনয়ন চেয়েছিলেন বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ও তাঁর ছোট চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। মনোনয়ন পেয়েছেন খায়ের আবদুল্লাহ। তিনিও তো একই পরিবারের মানুষ। বাইরের তো কেউ নন। এখন এ নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত যাঁরা সৃষ্টি করছেন, তাঁরা একটি বিশেষ পক্ষ। তাদের মূল উদ্দেশ্য দলের মধ্যে একটি বিভেদ সৃষ্টি করা। তাঁরা চাইছেন, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে বরিশালের রাজনীতি থেকে উৎখাত করবেন। কিন্তু এটা অসম্ভব ব্যাপার। তাঁর শিকড় অনেক গভীরে।
দলীয় মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন ঘোষণার এক মাস হয়ে গেল। অথচ জেলা ও নগরের পদধারী নেতারা কেউ প্রার্থীর পাশে নেই। এটা কীভাবে দেখছেন?
গোলাম আব্বাস চৌধুরী: প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি ১৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হলো। সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নগর কমিটির সভাপতিকে রাখা হলো না। আবার ১৪ মে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হলো, সেখানেও তাঁদের ডাকা হলো না। আমি বিশ্বাস করি, এসব সিদ্ধান্ত প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর নয়। কারণ, তিনি একজন সজ্জন ও মার্জিত ব্যক্তি। যাঁরা এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটা করেছেন এবং করছেন। তাঁরা মূলত দলের এই নেতাদের দূরে সরিয়ে বিভেদটাকে চাঙা রাখতে চাইছেন।
নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে, অথচ নেতারা প্রার্থীর পাশে নেই। এতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ভোটারদের কাছে ভুল বার্তা গেল না?
গোলাম আব্বাস চৌধুরী: হ্যাঁ, এটা তো কিছুটা গেছেই। তবে এটা ওভারকাম করার সময় এখনো যথেষ্ট আছে। সবাই এক মঞ্চে উঠলে এ ধারণা মিইয়ে যাবে।
পরে তো ৩২ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনার একটি উপদেষ্টা কমিটি করা হয়েছে, যেখানে আপনিও আছেন, জেলা সাধারণ সম্পাদকও আছেন। সেই কমিটির প্রধান আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। তারপরও তো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলো না।
গোলাম আব্বাস চৌধুরী: হ্যাঁ, এটা করা হয়েছে ঠিক। কিন্তু প্রতিটা বিষয়ই একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগোতে হয়। যাঁরা দলের নেতৃত্ব দেন, তাঁদের যথাযথ সম্মান, মর্যাদা নিশ্চিত না করা হলে সেটাও অবমাননাকর বিষয়ে পরিণত হয়। আমরা বলিনি যাব না কিংবা আমাদের নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বলেননি, তিনি আসবেন না। আমি বারবারই বলেছি, তিনি বরিশালে যাবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর তাঁর নির্দেশনা নিয়েই তিনি বরিশালে ফিরবেন।
এতে এই বিভেদ ঘুচবে—এ ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?
গোলাম আব্বাস চৌধুরী: অবশ্যই এ ক্ষেত্রে আমি শতভাগ আশাবাদী। আমি মনে করি, সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি। সব পক্ষকে ধৈর্য ধরতে হবে। কর্মী পর্যায়ে কিছুটা অনৈক্য থাকলেও মূল দলে অনৈক্য নেই। তারপরও বিষয়গুলো অনাকাঙ্ক্ষিত হওয়ায় আমরা বিব্রত।