টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছেন না সৌরভ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের সৌরভ কুমার দাস ওরফে সাগর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছেন না। সামনের দিনগুলোতে কীভাবে পড়াশোনা করবেন, তা নিয়ে তিনি চিন্তায় পড়ে গেছেন।
সৌরভ গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দাসপট্টি এলাকার স্বপন কুমার দাসের সন্তান। বাবা, মা, এক ভাই আর দুই বোন নিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবার সৌরভের। বাবা ঢাকায় একটি দরজির দোকানে কারিগর হিসেবে কাজ করেন। তাঁর সামান্য আয় দিয়ে চলে পাঁচ সদস্যের সংসার। নিজস্ব দেড় শতাংশ জায়গার ওপর কোনোভাবে খুপরিতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে তাঁদের জীবন। এবার তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান।
আলাপকালে সৌরভ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ আনুষঙ্গিক খরচের জন্য ২৫–৩০ হাজার টাকা লাগে। এ ছাড়া হলে ওঠার আগপর্যন্ত বাইরে মেসে থেকে পড়াশোনা করতে হলে প্রতি মাসে আরও পাঁচ–ছয় হাজার টাকা প্রয়োজন। পরিবার থেকে সেই টাকা জোগান দেওয়ার সামর্থ্য নেই। গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সী কিছু আর্থিক সহায়তা করেছেন, তবে আরও টাকার প্রয়োজন।
সৌরভের মা দীপালী রানী দাস বলেন, ‘আমার ছেলে পড়াশোনা করতে চায়। ওরে পড়ানোর সামর্থ্য আমাদের নাই। আমার পোলাডারে কী করে পড়াশোনা করাব?’
প্রতিবেশী ও গোয়ালন্দ বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোবিন্দ পোদ্দার বলেন, ‘সৌরভ অনেক ভালো ছেলে। অভাবের কারণে পড়াশোনা ঠিকমতো করতে পারছে না। প্রতি মাসে খরচের টাকার ব্যবস্থা হলে সৌরভ আরও ভালো কিছু করতে পারবে বলে বিশ্বাস করি।’
সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুল হালিম তালুকদার বলেন, ‘আমার জানামতে সৌরভ দরিদ্র পরিবারের সন্তান। পড়াশোনায় ভালো। আমরা কলেজে পড়ার সময় সাধ্যমতো সহায়তা করেছি।’
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্ত্তিক ঘোষ বলেন, ‘সৌরভদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। সৌরভ মাঝেমধ্যে শহরে ভাড়ায় অটোরিকশা চালিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ মেটাত। আর্থিকভাবে সহযোগিতা পেলে ছেলেটি পড়াশোনা করতে পারত।’