তাজউদ্দীন মেডিকেলে আবারও লিফট দুর্ঘটনায় রোগীর স্বজনের মৃত্যু

লিফট থেকে পড়ে নিহত ব্যক্তির লাশ মর্গে নেওয়া হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিফট দুর্ঘটনায় আবারও মৃত্য হয়েছে। এবার মারা গেছেন এক রোগীর স্বজন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে।

নিহত জাহিদুল ইসলামের (৪০) বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায়। তাঁর শিশুসন্তান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।

নিহত জাহিদুলের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জাহিদুল ইসলামের অসুস্থ সন্তানকে হাসপাতালের ১০ তলায় শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল। গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিচে নামার জন্য জাহিদুল ১০ তলায় লিফটের বাটনে চাপ দেন। কিছু সময় পর লিফটের দরজা খুলে যায়। লিফটের মেঝে ফাঁকা ছিল। তিনি ভেতরে পা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি নিচে পড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তাঁর শ্যালিকাসহ অন্য কয়েকজন রোগীর স্বজন অল্পের জন্য রক্ষা পান।
হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্য আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরাও এসেছিলাম। পরে লিফটের গাউন্ড ফ্লোর থেকে তাঁকে (জাহিদুল) রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই লিফটে কয়েক দিন ধরে সমস্যা ছিল। তবে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এবং কাউকে সর্তকও করেনি।’

হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে আকাশ আহমেদের নামের এক ব্যক্তির রোগী ভর্তি রয়েছে। আকাশ বলেন, ‘আমি আর জাহিদ ভাই পাশাপাশি বেডে কয়েক দিন হলো রয়েছি। আমি চা খেয়ে ফেরার পথে শুনি লিফটের ওপর থেকে তিনি পড়ে গেছেন। তাঁর শ্যালিকা চিৎকার করছিলেন। পরে আমরা সবাই দৌড়ে নিচে এসে বলি, একজন পড়ে গেছেন। সেখানে কোনো লিফটম্যান ছিল না। একজনকে ডেকে এনে লিফট খুলে তাঁকে বের করি। এর মধ্যেই জাহিদ ভাই মারা যান। কয়েক দিন ধরেই এখানকার লিফটগুলোর সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। কিন্তু কেউ গুরুত্ব দেয়নি।’

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘আমরা শুনতে পেয়েছিলাম, লিফট থেকে একজন পড়ে গেছেন। পরে লোকজন লিফট থেকে একজনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসেন। পরে লাশ মর্গে পাঠানো হয়।’

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘লিফট থেকে পড়ে একজন মারা গেছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা জানতে পেরেছি, লিফটি সচল ছিল না। কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, তদন্ত করে দেখা হবে।’

এর আগে চলতি বছরের ১২ মে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়ে মমতাজ (৫০) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ৩ মে চিকিৎসা নিতে আসা জিল্লুর রহমান (৭০) নামের এক রোগী হাসপাতালের ১২ তলায় লিফটের পাশের একটি ফাঁকা দিয়ে পড়ে নিহত হন।