নবীন শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা, শাস্তি চান ভুক্তভোগী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীকে মানসিক নির্যাতন ও মারধর করার হুমকির ঘটনাটি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিভাগের পক্ষ থেকে অভ্যন্তরীণভাবে মীমাংসার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রকি মুঠোফোনে এ অভিযোগ করেন।

এদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ওই ঘটনার পর মেস ছেড়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তিনি এখনো আতঙ্কিত। নিজেকে ক্যাম্পাসে নিরাপদ বোধ করছেন না। তিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে তাঁর এলাকার এক সিনিয়র শিক্ষার্থীর কক্ষে অবস্থান করছেন।

এর আগে গত রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বিনোদপুরের লেবুবাগান এলাকার ‘বিশ্বাস ম্যানশন’ মেসে নিজ কক্ষে মানসিক নির্যাতন, হয়রানি ও হুমকির শিকার হন মোহাম্মদ রকি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তর বিশ্বাস ও একই বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান।

আজ সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার পর আতঙ্কে তাড়াহুড়া করে মেস ছাড়তে গিয়ে প্রয়োজনীয় একটি বাক্স তিনি সেখানে ফেলে আসেন। এর পর থেকে বাক্সটি আনতে তিনি ভয় পাচ্ছেন। ক্যাম্পাসে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাঁর অভিযোগ, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিভাগের চেয়ারম্যান বিষয়টি মীমাংসার জন্য দর্শন বিভাগের সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

মোহাম্মদ রকি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেদিনের ঘটনার পর থেকেই নিজের ভেতর একটা আতঙ্ক কাজ করছে। বর্তমানে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে এক বড় ভাইয়ের কাছে অবস্থান করছি। আজ ক্লাস করেই ক্যাম্পাস থেকে সরাসরি হলে চলে এসেছি।’ তাঁর অভিযোগ, ‘মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে মীমাংসার জন্য আমাদের বিভাগের চেয়ারম্যান ম্যামকে প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু আমি কোনোভাবেই এই মীমাংসা চাই না। আমি চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক তাঁদের শাস্তি হোক।’

এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নুরুজ্জামান বলেন, ‘সবাই আমাদের শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের মঙ্গলের কথা চিন্তা করেই আমরা বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে মীমাংসার জন্য দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যানকে প্রস্তাব দিয়েছি। কারণ, কোনো শিক্ষার্থীর ক্ষতি হোক, সেটি আমরা চাই না।’

তবে দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নিলুফার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আজ বিভাগে সভা হয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে কোনো সমঝোতায় যাওয়া হবে না বলে বিভাগ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা বিভাগের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব।’

জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মীমাংসার বিষয়টি আমি জানি না। দুই বিভাগ থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আমাকে জানানো হয়নি। তাঁরা সিদ্ধান্ত জানালেই আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’