দৌলতখানে জমি নিয়ে বিরোধে ১২ বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভোলার দৌলতখানে প্রতিপক্ষ হামলা করে ১২টি পরিবারের বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার চরশুভি ইউনিয়নের দিদারুললাহ গ্রামের হাওলাদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শীতের এই সময়ে অনেকেই আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত আলাউদ্দিন হাওলাদার পক্ষের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ শাহাজাদা ও শাহে আলম হাওলাদারপক্ষ দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ লাঠিসোঁটা নিয়ে বৃহস্পতিবার তিনটার দিকে হামলা চালায়। তখন আলাউদ্দিন পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের করা মামলায় আদালতে হাজিরা দিচ্ছিলেন। এই সুযোগে তাঁদের বাড়িঘরে হামলা করা হয়। তবে প্রতিপক্ষ শাহাজাদা ও শাহে আলম হাওলাদার পক্ষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গতকাল শুক্রবার ভোরে গিয়ে দেখা যায়, ওই ১২টি পরিবারের বসতঘরের দরজা, জানালা, টিনের বেড়া, ঘরের খাট, আসবাব, বিদ্যুতের মিটার, সুইচ বোর্ড ভাঙা। এ ছাড়া ভাতের হাড়ি, থালাবাসন ও ভাত-তরকারি এলোমেলো পড়ে আছে।
আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, তাঁদের পৈতৃক প্রায় সাত একর জমি। এ জমি ১৯৪৯ সালে তার বাবা মৃত আবুল কাশেম হাওলাদার খরিদ সূত্রে মালিক হয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে তার সৎচাচারা (শাহে আলম-শাহজাদা হাওলাদার পক্ষ) দাদার জমি দাবি করেন। জোর করে জমির দখল নিতে চান। এ বিষয়ে সালিস, মামলা ও আপিল শুনানিতে প্রতিপক্ষ হেরে গেছে। গত এক বছরে প্রতিপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ধানকাটা, লুটতরাজের চারটি মামলা করেছে। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার হাজিরা দিতে গেলে বাড়ি পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে। এ সুযোগে প্রতিপক্ষ পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভাড়াটে ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সহায়তায় বসতঘরে হামলা চালায়। হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন রাশেদ, রুবেল, আনোয়ার হোসেন, রুবেল, মাকসুদুর রহমান, জিতু, আরিফ, সোহাগ, রিয়াজুদ্দিন ও সোয়েব হাওলাদার।
আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, প্রতিপক্ষ ১২টি ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। যাওয়ার সময় টাকা লুট করেছে। সব মিলিয়ে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বজলুর রহমান হাওলাদারের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, তাঁর ঘরের তালা ভেঙে ঢুকে প্রতিপক্ষ। বিদ্যুতের মিটার, সুইচ বোর্ড, জানালার কাচ, দরজা, টিভি ও রান্নাঘরের আসবাব ভেঙে দিয়েছে। টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করেছে।
শাহে আলম-শাহাজাদা পক্ষের রিয়াজ হাওলাদার বলেন, ওরা নিজেরাই ঘরে ভাঙচুর করেছেন। এখন তাঁদের ফাঁসাচ্ছেন।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেনবলেন, দুপক্ষই মুখোমুখি ও মারমুখী। গত দুই বছরে সেখানে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। তাদের সমঝোতার মানসিকতা নেই। ঘটনাস্থলে গত দুদিন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।