ক্ষমতায় যাওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়: জামায়াতের আমির

যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে দলের কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান আজ শুক্রবার সকালেছবি: প্রথম আলো

‘ক্ষমতায় যাওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়’ বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আজ শুক্রবার সকালে যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে দলের কর্মী সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতের আমির গোলাম রসূল। সকাল আটটা থেকে যশোর ও আশপাশের জেলা ও উপজেলা থেকে জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা সম্মেলন স্থলে জমায়েত হতে শুরু করেন।

জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘আপনারা পাশে থাকলে চাঁদাবাজ, দুর্নীতি ও দুঃশাসনমুক্ত দেশ হবে। এর জন্য প্রথমত আপনাদের ভালোবাসা, দ্বিতীয়ত সমর্থন, তৃতীয়ত আপনাদের পাশে পেতে চাই।’

আওয়ামী লীগ শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, মন্তব্য করে জামায়াতের আমীর বলেন, ‘এ দেশের যুব-যুবতীরা সার্টিফিকেট নিয়ে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছে। কিন্তু তাঁরা চাকরি পায় না। আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে। শিক্ষার কোনো মান নেই। শিক্ষাব্যবস্থা দিয়েই আমরা শুরু করব। আমরা এমন শিক্ষাব্যবস্থা উপহার দিতে চাই, যেখানে প্রত্যেকে কর্মী হয়ে উঠবেন।’

সংখ্যালঘু প্রশ্নে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা মেজোরিটি নই, মাইনোরিটিও নই। আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক। সংখ্যালঘু সংখ্যালঘু কিসের, সংবিধান সবার সমান অধিকার দিয়েছে।’ মামলা করার বিষয়ে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এখন দেখছি একটি মামলায় ৫০০–৭০০ জনকে আসামি করা হচ্ছে। প্রকৃত দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে। কিন্তু মেহেরবানি করে কেউ কোনো নিরীহ মানুষকে মামলায় আসামি করবেন না।’

যশোর জেলার উন্নয়ন বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলের প্রাচীন জেলা যশোর। পুরোনো জেলা হিসেবে যশোরের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যশোরবাসী ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত হয়েছে। একটা ভালো পার্ক নেই। উন্নয়নের কথা বলে ক্ষমতায় যাওয়ার আগে মানুষের পা ছুঁয়ে নেয়, ক্ষমতায় গেলে তারা ভুলে যায়। তারা ভাবে পাঁচ বছর পর আবার পা ছুঁয়ে নিলে হয়ে যাবে। মাঝখানে তারা মানুষকে মনে রাখে না। তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে–বিপক্ষে আর কত চেতনা বিক্রি করবে? চেতনার বড়ি আর বিক্রি হবে না।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারেক হোসেন, কর্মী পরিষদ সদস্য মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, আজীজুর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আমির আলী আযম, চুয়াডাঙ্গা জেলা আমির রহুল আমীন, মাগুরা জেলা আমির এম বি বাকের, নড়াইল জেলা আমির আতাউর রহমান, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য গাজী এনামুল হক প্রমুখ।

এদিকে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে যোগ দিতে আসা মিছিল থেকে প্রেসক্লাবের সাইনবোর্ড, সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ড নষ্ট করা হয়েছে। ওই সাইড বোর্ডে ‘মুজিব সড়ক’ লেখা ছিল। প্রেসক্লাব সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কে এই প্রতিষ্ঠানগুলো অবস্থিত। সাইনবোর্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম থাকায় জামায়াতের কর্মী–সমর্থকেরা ‘মুজিব’ লেখা অংশ কেটে নিয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে যশোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘এটা আমার নলেজে নেই। এমনটা তো হওয়ার কথা না; এমন কোনো নির্দেশনাও ছিল না। শেখ মুজিবের নাম থাকতেই পারে; তাই বলে তো কোনো প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। এমনটা হলে যারা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’