দেশের সরকার সংসদীয় পদ্ধতির কিন্তু স্থানীয় সরকারব্যবস্থা রাষ্ট্রপতিশাসিত: তোফায়েল আহমেদ

সিলেটে স্থানীয় সরকার সংস্কারবিষয়ক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ। বৃহস্পতিবার নগরের একটি রেস্তোরাঁ মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

দেশের সরকার সংসদীয় পদ্ধতির কিন্তু স্থানীয় সরকারব্যবস্থা রাষ্ট্রপতিশাসিত উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন একেকটি একেকভাবে কাজ করছে। প্রচলিত কাঠামোয় প্রতিষ্ঠানগুলো এক ব্যক্তির কর্তৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে, যার ফলে কাউন্সিল অধিবেশনে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে, তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আবার অধিবেশনও ঠিকমতো হয় না। প্রণীত পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় কাউন্সিল সত্যিকার অর্থে কার্যকর হচ্ছে না।’

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সিলেট নগরের ধোপাদিঘিরপার এলাকার একটি রেস্তোরাঁর মিলনায়তনে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের যৌথ আয়োজনে এবং ইউএনডিপির সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার সংস্কারবিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী।

সভায় স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, আবদুর রহমান, মাহফুজ কবীর, মাশহুদা খাতুন শেফালী, মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী ইলিরা দেওয়ান, অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার দপ্তরের পরিচালক ফারুক আহমেদ, সিলেটের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ এহ্সান শাহ্, সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা অনেক পুরোনো। এখানের কতগুলো বিচ্ছিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আন্তসম্পর্ক তৈরি হয়নি। ফলে এগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই অসামঞ্জস্যপূর্ণ এ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি।

পরে উন্মুক্ত আলোচনায় সভায় অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের জন্য সেবাগুলো জনবান্ধব, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের ব্যবহার না করা, নারী কোটাব্যবস্থাকে কার্যকর, প্রয়োজনে সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্নির্ধারণ, জবাবদিহিমূলক পরিবেশ তৈরি, শিক্ষিত মানুষদের স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনাগ্রহ দূর, প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মতো বিভিন্ন সুপারিশ করেন।

মতবিনিময় সভায় জনপ্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ, এনজিও প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।