মেহেরপুরে কলেজের অ্যাডহক কমিটি নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের দ্বন্দ্ব, অধ্যক্ষের কক্ষে তালা
মেহেরপুরের গাংনীর মহিলা ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পর্ষদ গঠনের জন্য অ্যাডহক কমিটি নিয়ে উপজেলা বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। দ্বন্দ্বের জেরে আজ রোববার দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়েছেন বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা।
কলেজের শিক্ষকেরা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর গত ২১ আগস্ট দেশের সব বেসরকারি কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি বাতিল করে পুনর্গঠনের নির্দেশ দেয় সরকার। গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজে অ্যাডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কাথুলী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফর আকবরকে সভাপতি ও বালিয়াঘাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাহাব উদ্দীনকে বিদ্যোৎসাহী সদস্য নিয়োগ দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
গতকাল শনিবার এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনের অনুসারী বিএনপির কর্মী শাহাজাহান সেলিম ও সুলেরী আলভী, যুবদল কর্মী জামাল উদ্দীন ও পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামানসহ কিছু নেতা-কর্মী কলেজে গিয়ে কমিটি বাতিলের দাবি জানান। পরে তাঁরা বেলা ১১টার দিকে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় অধ্যক্ষ কলেজে ছিলেন না।
উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন বলেন, অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গনীর অনুসারী জাফর আকবরকে মনোনীত করা হয়েছে। তাঁর নামে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সভাপতি জাভেদ মাসুদ বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম খুব গোপনে কলেজের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে পছন্দের লোক দিয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির সব সদস্যের নামে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে কমিটি বাতিলের দাবি ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া ও পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আগের কমিটি বাতিল করেছে। অ্যাডহক কমিটি গঠন করে নতুন পরিচালনা পরিষদ তৈরি করার কথা বলেছে। যদি অ্যাডহক কমিটিই দুর্নীতিপরায়ণ হয়, তাহলে পর্ষদ গঠন করা সম্ভব হবে না। এ কারণে কমিটি বাতিলের দাবি করা হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম বলেন, অ্যাডহক কমিটির জন্য আগ্রহী ব্যক্তিরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া ফরম পূরণ করে পাঠায়। এখানে অধ্যক্ষ হিসেবে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই।
অ্যাডহক কমিটির সভাপতি জাফর আকবর বলেন, উপজেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা সভাপতি হতে চেয়েছিলেন। তাঁকে সভাপতি করায় তাঁরা বিরাগভাজন হয়ে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ আরও প্রকট হলো। এসব করে দলের অভ্যন্তরীণ কলহ প্রকাশ করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা বলেন, গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেওয়ার ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।