আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যের দেওয়া মালা পরে বিপাকে বিএনপির নেতা
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর কাছ থেকে একটি মালা পরে বিপাকে পড়েছেন বিএনপির এক নেতা। তাঁর মালা পরা ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে ‘তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন’ বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তানোর উপজেলা পরিষদের শহীদ মিনার চত্বরে এক মতবিনিময় সভায় এই মালা দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিএনপির ওই নেতার নাম মোজাম্মেল খান। তিনি তানোর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং উপজেলার সরনজাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রচারণা দেখে তিনি বলেন, সংসদ সদস্য তাঁকে স্নেহ করে মালা দিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেননি। তাঁকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শহীদ মিনার চত্বরে তানোর উপজেলার সব ইউপির চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গভীর নলকূপের অপারেটরদের নিয়ে মতবিনিময় সভা হয়। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবিদা সিফাত সভাপতিত্ব করেন। ওই সভায় সরনজাই ইউপির চেয়ারম্যান বিএনপির নেতা মোজাম্মেল খান উপস্থিত হলে টেবিলে থাকা একটি মালা ওমর ফারুক চৌধুরী তাঁর গলায় পরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘মালা তোমার গলাতেই মানায় তুমিই পরো।’ মোজাম্মেল খানও মালাটি পরতে বাধ্য হন। অনুষ্ঠানে একইভাবে উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আফসার আলীকেও একটি মালা পরিয়ে দেন সংসদ সদস্য।
অনুষ্ঠান শেষে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রামিল হাসান তাঁর ফেসবুকে মালা পরানোর ছবি পোস্ট করে লেখেন ‘বিএনপি থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আদর্শিত হয়ে আওয়ামী লীগের নৌকার পক্ষে যোগদান।’
ফেসবুকের এই ছবি দেখার পর সাংবাদিকদের কাছে ছুটে আসেন মোজাম্মেল খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ছাত্রদল করেছেন, যুবদল করেছেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। এখন আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। তিনি কমিটির অন্যতম সদস্য। তিনি কেন আওয়ামী লীগে যোগদান করবেন? তিনি বলেন, সংসদ সদস্য তাঁকে স্নেহ করেন বলে মালাটি দিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেননি।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রামিল হাসান বলেন, ‘অবশ্যই মোজাম্মেল চেয়ারম্যান আনুষ্ঠানিকভাবে মালা পরে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন।’ মোজাম্মেল অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করছেন শুনে তিনি বলেন, ‘আগে সংবাদ সম্মেলন করুক তারপরে দেখা যাবে।’ রামিল বলেন, ‘মোজাম্মেল একা নন, ওই অনুষ্ঠানে বিএনপির আরও নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। এর মধ্যে মুন্ডুমালা পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আফসার আলীও আছেন।’ তবে এ বিষয়ে আফসার আলীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মোজাম্মেলের কথাই ঠিক। বিএনপি করলেও তিনি তাঁকে স্নেহ করেন। তাঁর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকায় ডেকে গলায় মালা দিয়েছেন। এটা দেখে ছেলেপেলে ফেসবুকে দিয়েছে।
মতবিনিময় সভার পর উপজেলার সব শিক্ষককে নিয়ে একটি আলোচনা সভা করেন সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। এ উপলক্ষে উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। বিদ্যালয় বন্ধ করে সভার করার ব্যাপারে জানতে চাইলে ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, তাঁরা সংরক্ষিত ছুটি নিয়ে সভায় আসতেই পারেন। যেহেতু শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সভাটি হয়েছে।