সাংবাদিক রব্বানি হত্যা মামলার ১৭ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

সাংবাদিক গোলাম রব্বানি
ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যা মামলার এজাহারে থাকা ২২ আসামির মধ্যে মাত্র ৫ জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চার দিন আগে মামলাটি হলেও এরপর আর কোনো আসামি ধরা পড়েনি। তবে মামলার আগে র‍্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে আটক করে; যাঁদের সবাই বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে আছেন।

মামলার চার দিন পার হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন সাংবাদিক রব্বানির মেয়ে রাব্বীলা তুল জান্নাত। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবার কাছে আমাদের চাওয়া একটাই, আমার বাবার খুনিরা যাতে রক্ষা না পায়। তারা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে। মামলা হয়েছে চার দিন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মামলা হওয়ার পর একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে আমাদের মনে স্বাভাবিকভাবেই নানা সন্দেহ দানা বাঁধছে।’

সাংবাদিক রব্বানি হত্যার তিন পর তাঁর স্ত্রী মনিরা বেগম বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এজাহারে আসামি হিসেবে উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম, তাঁর ছেলেসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে।

আরও পড়ুন

রব্বানির ওপর হামলার ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ ৯ জনকে আটক করে। মামলা হওয়ার আগে গত শনিবার সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলমসহ তিনজনকে আটক করে র‍্যাব। ওই দিন বিকেলে বগুড়া থেকে আরও একজনকে র‍্যাব আটক করে। সব মিলিয়ে প্রধান আসামিসহ ১৩ জনকে আটক করা হয়। তাঁদের সবাইকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে সব আসামির বিরুদ্ধে রিমান্ড চেয়ে পুলিশ আদালতে পাঠায়। আদালত তাঁদের সবাইকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পাঠান। এর মধ্যে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলমের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

সাংবাদিক রব্বানি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁরা হলেন—প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম, রেজাউল করিম, মো. মনিরুজ্জামান, মো. মিলন মিয়া, মো. গোলাম কিবরিয়া, জাকিরুল ইসলাম, শহিদুর রহমান, মো. তোফাজ্জল, আয়নাল হক, মো. কফিল উদ্দিন, মো. ফজলু মিয়া, মো. মুকবুল ও মো. ওহিদুজ্জামান। তাঁদের মধ্যে মামলার এজাহারে নাম আছে মাহমুদুল আলম, রেজাউল করিম, মো. মনিরুজ্জামান, মো. মিলন মিয়া ও মো. গোলাম কিবরিয়ার। এই পাঁচজন ছাড়া বাকি আসামিদের নাম এজাহারে নেই। অর্থাৎ এজাহারে থাকা ২২ জনের মধ্যে ৫ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পেরেছে, বাকি ১৭ জনকে পুলিশ এখনো ধরতে পারেনি।

আরও পড়ুন

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই বিষয়ে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটি সঠিকভাবে পরিচালনা ও তদন্তে গতি আনতে ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাকি আসামিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারও করা যাবে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জামালপুরের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরমান আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে ওই সব বিষয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে আশা করছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাকি আসামিরা গ্রেপ্তার হবেন। একই সঙ্গে মামলাটি আমরা খুব গুরুত্ব দিয়েই দেখছি এবং কাজ করছি।’