ফুলপুর–তারাকান্দায়ও বন্যার পানি, আটকে পড়াদের উদ্ধার চলছে
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায়ও বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলার ছনধরা ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামে পানিবন্দী অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ। তাঁদের উদ্ধারে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বন্যার পানির কারণে ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলায় ৪ হাজার ২৬০ হেক্টর আমন ধানের খেত নিমজ্জিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেরপুরের নালিতাবাড়ী এলাকা থেকে মালিঝি নদী হয়ে ফুলপুরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে চলা বৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন ইউনয়নের নিচু এলাকায় পানি জমতে শুরু করে। গতকাল শনিবার রাতভর বৃষ্টিতে মানুষ পানিবন্দী হতে শুরু করে।
ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম আরিফুল ইসলাম জানান, শেরপুরের নালিতাবাড়ী এলাকা থেকে পানি নেমে উপজেলার ছন্দরা ইউনিয়ন পুরোটা প্লাবিত হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম সকাল থেকে চলছে। স্থানীয় নৌকা ও স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েক শ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়নটিতে যাওয়ার সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অন্যান্য ইউনিয়নেও আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নেও জলবদ্ধতা রয়েছে, তবে ছনধরায় সবচেয়ে বেশি। আজ সকালের হিসাবে ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে, তবে এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
ফুলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফারুক আহাম্মেদ বলেন, পুরো উপজেলায় ৩ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমির অবস্থা বেশি খারাপ। এ ছাড়া ৭০ হেক্টর সবজি ও ২ হেক্টর মাষকলাই পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ফুলপুরে পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে কাজ করছে র্যাপিড রেসপন্স বিডি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা নৌকা নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে বয়স্ক, শিশু ও নারীদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যায় বলে জানান সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক তাসফিক হক নাফি। তিনি বলেন, ‘আজ দুপুর দুইটা পর্যন্ত ২৬৭ জনকে উদ্ধার করেছে ১৯ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে গঠিত আমাদের টিম। আমাদের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
এদিকে তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা, কাকনী, তারাকান্দা, ঢাকুয়া ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা সবচেয়ে বেশি। তারাকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুনিমা কাঞ্চি সুপ্রভা শাওন বলেন, জলাবদ্ধতায় ৬০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ৫৬০ হেক্টর ধান ও ৪০ হেক্টর শীতকালীন আগাম সবজি। দু-তিন দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে কৃষকের তেমন ক্ষতি হবে না। তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত মোটামুটি ভালো রয়েছি। বৃষ্টি বাড়ল এখানেও পরিস্থিতি খারাপের আশঙ্কা রয়েছে।’