নরসিংদীতে পাটকলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জনতা পাটকলে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। তাঁরা পাটকলের প্রশাসনিক ভবন, লেবার অফিস, নিরাপত্তা কার্যালয়, গেস্টহাউসে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। পাশাপাশি শ্রমিকদের মজুরির প্রায় ৫০ লাখ টাকা লুট করেন বলে অভিযোগ কারখানা কর্তৃপক্ষের।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার বাগপাড়া এলাকার ওই পাটকলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে পাটকলটির ৬ নিরাপত্তাকর্মী আহত হন। খবর পেয়ে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জনতা জুট মিলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. মতিউর রহমান বলেন, কয়েক দিন ধরে কারখানার শ্রমিকেরা বেতন-বোনাস বৃদ্ধিসহ ১৪ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সভা হচ্ছিল। ওই সময় মালিকপক্ষ তাঁদের দাবি বাস্তবায়নে ১৫ দিন সময় চাইলে শ্রমিকদের একটি অংশ বিক্ষুব্ধ হন। তাঁরা কারখানার প্রশাসনিক ভবন, লেবার অফিস, নিরাপত্তা কার্যালয় ও গেস্টহাউসে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালান।
মতিউর রহমান আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট করাসহ বিভিন্ন আসবাব ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন তাঁরা। এ ছাড়া হিসাবকক্ষের লকার ভেঙে শ্রমিকদের মজুরির প্রায় অর্ধ কোটি টাকা লুট করে নেওয়া হয়। এ সময় হামলায় বাধা দিতে গিয়ে আহত হন মিলের কর্মরত ৬ নিরাপত্তাকর্মী। পরে নরসিংদী ক্যাম্পের সেনাবাহিনী, র্যাব ও পলাশ থানার পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শ্রমিক প্রথম আলোকে বলেন, তিন দিন ধরে পাটকলটিতে তীব্র আন্দোলন চলছিল। মালিকপক্ষের বক্তব্য ছিল, বেতন বাড়াতে হলে তো হিসাব-নিকাশ করে দেখতে হবে। এসব নিয়ে আলোচনা করতেই বৃহস্পতিবার রাতে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে মালিকপক্ষ আলোচনায় বসেছিল। মালিকপক্ষ ১৫ দিন সময় চান। সভা থেকে বের হয়ে আসার সময়ই আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে মিশে যাওয়া একদল দুর্বৃত্ত হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, পাটকলে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।