বিএসএফের গুলিতে কিশোরী হত্যার প্রতিবাদে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

বিএসএফের গুলিতে কিশোরী নিহতের প্রতিবাদে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ। বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রুদ্র তোরণের সামনেছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে স্বর্ণা দাস (১৪) নামের এক কিশোরী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে সিলেটের শাহজালার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।

আজ বুধবার সন্ধ্যা সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রুদ্র তোরণের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কেরা। এ সময় সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমন্বয়ক দেলোয়ার হোসেন, আবু সালেহ মো. নাসিম ও ফয়সাল হোসেন বক্তব্য দেন।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রুদ্র তোরণের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এরপর সাতটার দিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে আবার তোরণের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ভারতীয় আগ্রাসন, মানি না মানব না’, ‘ভারতের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, দিল্লির তাবেদারি মানি না মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের ওপর একের পর এক ভারতীয় আগ্রাসন চলছে। কয়েক দিন আগে তারা পানি ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে অনেক জেলা প্লাবিত হয়। সেই ক্ষত না শুকাতেই আমাদের বোন স্বর্ণাকে সীমান্তে হত্যা করা হয়েছে। বিএসএফ চাইলে তাকে আটক করতে পারত কিন্তু হত্যা করার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? আমরা মনে করছি, হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে বাংলাদেশকে ইজারা দিয়েছিল। ভারতে গিয়েও তার চক্রান্ত থেমে নেই।’

আবু সালেহ মো. নাসিম বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আমাদের বোন স্বর্ণাকে হত্যা করা হয়েছে। সীমান্তে যখন হত্যা হয়, আমাদের চোখে কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানী ভেসে ওঠে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সীমান্তে আমাদের আরেকজন মারা গেলে আমরা ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও করব।’

ফয়সাল হোসেন বলেন, ‘ভারতের বিএসএফ সীমান্তে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশের সীমান্তে এ ধরনের হত্যাযজ্ঞ চলে না। তারা নির্মমতার সর্বনিম্ন স্তরে নেমে গেছে, যা ইসরায়েলকে হার মানিয়েছে। এরপর যদি আর একটা গুলি চলে, আমরা ভাবব নির্দিষ্ট মানুষের দিকে নয়, সারা বাংলাদেশের মানুষের ওপর গুলি ছুড়েছে। সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ করা।’

১ সেপ্টেম্বর রাতে মায়ের সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরায় থাকা ভাইকে দেখতে যাওয়ার সময় কুলাউড়া সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলিতে কিশোরী স্বর্ণা দাস নিহত হয়। স্বর্ণা জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের পরেন্দ্র দাসের মেয়ে।