নোয়াখালীতে আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা

নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। আজ বিকেল চারটায়ছবি: প্রথম আলো

টানা বৃষ্টিতে আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীতে। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে আজ শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলা শহর মাইজদীতে ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করেছে জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। এরই মধ্যে ডুবে গেছে শহরের অনেক সড়ক। আতঙ্ক বিরাজ করছে উপজেলাগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে।

শহরের পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার এলাকার ছাবিদ মিয়া সড়কের পাশের বাড়ির বাসিন্দা সানজিদা আক্তার বলেন, কয়েক দিন ধরে কম বৃষ্টি হওয়ায় বন্যার পানি নেমে গিয়েছিল। গতকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে আবার রান্না ঘরে পানি উঠেছে। আজ দুপুরে রান্নাও করতে পারেননি। বাচ্চাদের নিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে আছেন। যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

এ বিষয়ে জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে নোয়াখালীতে গতকাল রাত থেকে কখনো মাঝারি, কখনো ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। জেলা শহর মাইজদীতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে ৪৯ মিলিমিটার। বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।

আজ সকালে জেলা শহর মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিণারায়ণপুর ও বিশ্বনাথ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ওই সব এলাকার অনেক সড়ক ডুবে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত প্রায় দুই সপ্তাহ তুলনামূলক বৃষ্টি কম হওয়ায় এবং রোদ থাকায় বন্যার পানি অনেকটাই নেমে গিয়েছিল। কিন্তু এখন সড়কগুলো আবার ডুবে যাচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে জেলা শহর মাইজদীর টাউন হল মোড়ের ফ্ল্যাট রোড। সড়কটির দুই পাশের অনেক দোকানে পানি ‍ঢুকে পড়েছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে রেডক্রিসেন্ট, প্রেসক্লাব, জেলা জজ আদালত চত্বর ও সামনের সড়ক।

টাউন হল মোড় এলাকার ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে যায়। পানির কারণে দোকানে ক্রেতারা আসতে চায় না। লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম হোসাইন বলেন, বন্যার পানিতে বাড়িঘর ডুবে ছিল এক মাসের বেশি সময়। এখন আবার বৃষ্টিতে বাড়িতে পানি ওঠার উপক্রম হয়েছে। পানিনিষ্কাশনের কোনো পথ নেই। বাসিন্দাদের ভোগান্তি দূর করার কথা সবাই বলেন। কিন্তু কাজের কাজ কেউ করেন না।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান খান বলেন, টানা বৃষ্টিতে আবার বন্যা হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাঁরা সব উপজেলায় খোঁজখবর রাখছেন। নতুন করে কেউ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আসছেন না। বেগমগঞ্জ উপজেলায় প্রায় আড়াই হাজার মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। কারণ, উপজেলাটির কিছু এলাকায় এখনো বাড়িতে পানি রয়েছে। তাই বাসিন্দারা বাড়ি ফিরতে পারছেন না।