কাল ফেরত পাঠানো হচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিজিপির ১২৩ সদস্যকে

মিয়ানমারের রাজধানী সিথুয়ে বন্দর থেকে জাহাজে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে জাহাজে ওঠার আগে ৮৫ জন বাংলাদেশি। আজ রোববার সকালে নৌবাহিনীর জাহাজটি কক্সবাজার এসে পৌঁছানোর কথাছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ১২৩ সদস্যকে আগামীকাল রোববার নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। দুপুরে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছটার বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট থেকে জাহাজে করে তাঁদের মিয়ানামারে ফেরত পাঠানো হবে। একই দিনে মিয়ানমারের কারাগারে সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ায় মুক্তি পাওয়া ৮৫ বাংলাদেশি নাগরিক কক্সবাজারে ফিরবেন।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরকান আর্মির সঙ্গে সরকারি বাহিনীর চলমান সংঘাতের মধ্যে গত দুই মাসে কয়েক দফায় নাফ নদী অতিক্রম করে সে দেশের সেনাবাহিনী এবং বিজিপির ১২৩ সদস্য বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁদের টেকনাফের দমদমিয়া এলাকার একটি বহুতল ভবনে রাখা হয়। আগামীকাল সকালে একাধিক গাড়িতে করে তাঁদের সবাইকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছটার বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে নিয়ে আসা হবে। সেখান থেকে একটি জাহাজে করে তাঁদের মিয়ানমারের সিটওয়ে বন্দরে পাঠানো হবে।

পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ৮৫ বাংলাদেশি নাগরিককে নিয়ে আজ শনিবার ৮৫ সিটওয়ে বন্দর থেকে মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ ‘ইউএমএস চিন ডুইন’ কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আগামীকাল সকালে জাহাজটি কক্সবাজার উপকূলের সোনাদিয়া চ্যানেলে পৌঁছার কথা রয়েছে। সেই জাহাজে করেই বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিজিপির ১২৩ সদস্য ফিরে যাবেন। বাংলাদেশের পক্ষে পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. রাহাত বিন কুতুব।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনাসদস্যদের ফেরত পাঠানোর সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ১২৩ জনের মধ্যে সেনাসদস্য রয়েছেন ৮ জন, বাকিরা বিজিপির সদস্য। এর আগেও তিন দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি ও মিয়ানামার সেনাবাহিনীর ৭৫২ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ৮৫ বাংলাদেশির বাড়ি কক্সবাজার, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী ও ঢাকা জেলায়। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন সাগরে মাছ ধরার সময় ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে গ্রেপ্তার হন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। এর বাইরে বাকিরা বিভিন্ন সময় সীমান্তে অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এর আগে গত ৯ জুন মিয়ানমারের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরেন ৪৫ বাংলাদেশি। গত ২৫ এপ্রিল ফেরেন আরও ১৭৩ জন।