গোয়ালন্দে শাটল ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার সোয়া দুই ঘণ্টা পর সচল

লাইনচ্যুত ট্রেন সচল করার কাজ চলছে। আজ সোমবার সকালে গোয়ালন্দ বাজার ও দৌলতদিয়া ঘাটের মাঝামাঝি স্থানে ফিডমিল এলাকায়ছবি: এম রাশেদুল হক

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থেকে ছেড়ে আসা কুষ্টিয়ার পোড়াদহগামী শাটল ট্রেনের পেছনের একটি কোচের চাকা লাইনচ্যুত হওয়ার সোয়া দুই ঘণ্টা পর আবার সচল হয়েছে। আজ সোমবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে গোয়ালন্দ বাজার ও দৌলতদিয়া ঘাটের মাঝামাঝি স্থান গোয়ালন্দ ফিডমিল এলাকায় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। পরে রাজবাড়ী রেলওয়ে থেকে কারিগরি দলের লোকজন এসে সকাল ১০টার দিকে ট্রেনটির চলাচল স্বাভাবিক করেন।

রাজবাড়ী রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ ঘাট থেকে পোড়াদহগামী ছেড়ে আসা শাটল ট্রেনটি আজ সকাল ৭টার ৪০ মিনিটে স্থানীয় ফিডমিল এলাকায় বিকট শব্দে লাইনচ্যুত হয়। এতে ট্রেনের ভেতরে থাকা লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে দেখা যায়, ট্রেনটির পেছনের ৫১০৮ নম্বর কোচের একটি চাকা লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে জানমালের কোনো ক্ষতি হয়নি। খবর পেয়ে রাজবাড়ী রেলস্টেশনের কারিগরি বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে লাইনচ্যুত চাকা সচলের কাজ শুরু করেন। সোয়া দুই ঘণ্টা পর সকাল ১০টার দিকে ট্রেনটি রাজবাড়ীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

রাজবাড়ী রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (লোকো ইনচার্জ) হুমায়ুন কবির বলেন, ট্রেনটি সকাল ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে রাজবাড়ী থেকে গোয়ালন্দ ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গোয়ালন্দ ঘাট থেকে পোড়াদহের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। গোয়ালন্দ ফিডমিল এলাকায় পৌঁছালে পেছনের একটি কোচের চাকা লাইনচ্যুত হয়। খবর পেয়ে রাজবাড়ী কারিগরি বিভাগের লোকজনকে পাঠানো হয়। সকাল ১০টার দিকে উদ্ধার করে ট্রেনটি আবার পোড়াদহের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে এ ঘটনায় কোনো শিডিউল বিপর্যয় হয়নি।

স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্য, গোয়ালন্দ বাজার থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার রেললাইন দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ। লাইনের অধিকাংশ জায়গায় পাথর ও নাটবল্টু নেই। লাইনে স্থাপিত কাঠের স্লিপারগুলো পচে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে এ এলাকায় প্রায়ই ট্রান দুর্ঘটনা ঘটে। রেললাইন দ্রুত সংস্কার কিংবা উন্নতমানের নতুন রেললাইন স্থাপন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

জরাজীর্ণ লাইন সম্পর্কে রাজবাড়ী রেলওয়ের ঊর্ধবতন উপসহকারী প্রকৌশলী (ক্যারেজ ইনচার্জ) শামীম আহম্মেদ বলেন, গোয়ালন্দ বাজার থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত লাইনের ৯৫ শতাংশ কাঠের স্লিপার পচে গেছে। কিছু স্থানের ডগস্পাই (স্লিপার ধরে রাখার ক্লিপ) নেই। ট্রেনের গতি স্বাভাবিকভাবে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৯০ কিলোমিটার থাকলেও গোয়ালন্দ বাজার থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত মাত্র ১৫ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করে ট্রেন। সেখানে নাজুক পরিস্থিতি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

গত বছর ১৮ আগস্ট দুপুরে গোয়ালন্দ ঘাট থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী মেইল এক্সপ্রেস ট্রেনের দুটি কোচ একই এলাকায় লাইনচ্যুত হয়। প্রায় ১১ ঘণ্টা পর কোচ দুটি উদ্ধার করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এ ছাড়া গত বছরের ১৪ অক্টোবর নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস ট্রেনের পেছনের মালবাহী কোচের চাকা লাইনচ্যুত হয়।