পাবনায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ছয়জন গুলিবিদ্ধ
পাবনায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা সদরের হিমাইতপুর ইউনিয়নের চরবাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হওয়া ব্যক্তিরা হলেন চরবাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের হাবু সরদার (৫০), মামুন হোসেন (৩০), সেলিম মণ্ডল (৪০), হামিম হোসেন (১২), সবিরুল শেখ (৪০) ও ইসহাক প্রামাণিক (৪৫)। তাঁদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা ছিল। সভায় বক্তব্য দেওয়া নিয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজু মণ্ডলের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমানের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় দুই পক্ষ একে অপরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। ঘটনার পর রাতেই গ্রামে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পরদিন সকাল থেকে আবার দুই পক্ষ সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে।
দুপুর ১২টার দিকে সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকরা গ্রামের মুজিব বাঁধের একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে থাকেন। এ সময় সভাপতি নজু মণ্ডলের সমর্থকেরা সেখানে এলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়।
দুপুর ১২টার দিকে সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকরা গ্রামের মুজিব বাঁধের একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে থাকেন। এ সময় সভাপতি নজু মণ্ডলের সমর্থকেরা সেখানে এলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। এতে ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ ছয়জনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতাল থেকে গুলিবিদ্ধ হাবু সরদার জানান, তাঁরা সবাই সাধারণ সম্পাদকের সমর্থক। দুপুরে তাঁরা চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় সভাপতি নজু মণ্ডলের নেতৃত্বে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা ও গুলি চালানো হয়। হামলাকারীরা বাড়িঘরও ভাঙচুর করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
জানতে চাইলে পাবনা পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ শেখ বলেন, হিমাইতপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ বিরোধ চলে আসছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পাবনা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজু মণ্ডল ও সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমানের মুঠোফোনে আজ বিকেলে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা ধরেননি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্ধু বালা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে গ্রামটিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরেই সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষ গা ঢাকা দিয়ে আছে।