ম্রো ভাষায় মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠের জীবনী
মহান মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠের জীবনী নিয়ে ম্রো ভাষার গ্রন্থ নমমো তসেন কিয়াকমি-এর মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে ক্রামাধর্মের প্রবর্তক ক্রামাদি মেনলের আঁকা ছবির অ্যালবামও। ম্রো ভাষার লেখক ও গবেষক ইয়াংঙান ম্রো এই জীবনী রচনা এবং ছবির অ্যালবাম সংকলন করেছেন।
আজ রোববার সকাল ১০টায় জেলা শহরের উজানিপাড়ার একটি ক্যাফেটেরিয়ায় বীরশ্রেষ্ঠদের জীবনীগ্রন্থ ও ছবির অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রবীণ শিক্ষক চিত্তরঞ্জন জলদাশ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ম্রো ভাষার শিক্ষক ও শিল্পী ঙানসিং ম্রো, ম্রো ভাষা উন্নয়ন ও সংরক্ষণ কমিটির সদস্য রিংইয়ং ম্রো, সাংবাদিক মিনারুল হক, কবি রিপন চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানে লেখক ইয়াংঙান ম্রো বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠকে নিয়ে লেখা জীবনী ম্রোদের অনেকেই পড়তে পারেন না। অথচ ম্রোরা সবাই বীরশ্রেষ্ঠদের জীবন এবং মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের বীরত্বের কাহিনি জানতে আগ্রহী। তাই বাংলা না জানা ম্রো ভাষার পাঠকদের জন্য ম্রো ভাষায় সাত বীরশ্রেষ্ঠের জীবনীগ্রন্থটি লিখেছেন তিনি।
ক্রামাদি মেনলের ১৯৮২ সালে আঁকা ছবির অ্যালবাম সম্পর্কে ইয়াংঙান ম্রো বলেন, ক্রামাদি মেনলে শুধু ক্রামাধর্মের প্রবর্তক ও ম্রো বর্ণমালার উদ্ভাবক নন, তিনি একজন ভালো অঙ্কনশিল্পীও। কঠোর ধ্যান-সাধনার মধ্য দিয়ে তিনি সেই সময়ে সমাজের মানুষের অশিক্ষা, কুসংস্কার, ভালো-মন্দ নিয়ে ক্যানভাসে ছবি এঁকেছেন। তাঁর অঙ্কন করা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সেসব ছবি সংগ্রহ এবং সংকলন করে অ্যালবাম হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দুই দশক আগেও সবচেয়ে অনগ্রসর ম্রোরা এখন শিক্ষা-সংস্কৃতিতে অনেক এগিয়েছে। ক্রামাধর্মের প্রবর্তক মেনলের সমাজসংস্কারে সবার আগে চিম্বুক পাহাড়ের ম্রোরা জেগে উঠেছে। ভূমিদস্যুদের নজরে পড়া চিম্বুক পাহাড়কে রক্ষা করা গেলে একসময় ম্রোরা বান্দরবানে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।
গ্রন্থ ও অ্যালবামের উদ্বোধক প্রবীণ শিক্ষক চিত্তরঞ্জন জলদাশ বলেন, তাঁর ছাত্র ইয়াংঙান ম্রো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে নিজের ম্রো জনগোষ্ঠীর সমাজ, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ নিয়ে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেছেন। তাঁর এই নিরলস প্রচেষ্টা ম্রো সমাজের পরিবর্তনকে যেমন পরিমাপ করে, তেমনি সমাজ-মননকেও সমৃদ্ধ করছে।