কথা ছিল মালয়েশিয়ায় যাওয়ার, ফ্লাইট বাতিলের পর বাড়ি ফিরছিলেন, তারপর...
মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার বাবার সঙ্গে ঢাকায় যান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার তানভির মিয়া (২২)। ফ্লাইট ছিল শুক্রবার ভোর চারটায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে জানতে পারেন, ফ্লাইট বাতিল করে নতুন তারিখ দেওয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে শুক্রবার বিকেলে আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলসেতু অতিক্রমের সময় ট্রেনের দরজা থেকে মেঘনা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন।
গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার সময় নিখোঁজ হন তানভির। দুর্ঘটনার পর থেকে ভৈরব নৌ থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তানভিরের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
তানভির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দেবগ্রাম গ্রামের মেরাজ মিয়ার ছেলে। দুর্ঘটনার সময় ওই ট্রেনে তাঁর বাবা উপস্থিত ছিলেন। দুর্ঘটনার পর থেকে বাবা পাগলপ্রায়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফ্লাইট মিস না হলে আমার ছেলে আজ মালয়েশিয়ায় থাকত। আর এখন পানির নিচে।’ হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, ‘এখন আমি ছেলের মায়ের কাছে কী জবাব দেব?’
নৌ পুলিশ ও নিখোঁজ তরুণের স্বজনেরা জানান, মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন তানভির। দুপুরে জানতে পারে ফ্লাইট বাতিল হয়ে নতুন তারিখ দেওয়া হয়েছে ৭ জুন। এমন অবস্থায় তানভিরকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা ছেড়ে আসা উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়িতে ফিরছিলেন বাবা। বাবা–ছেলে দুজনই ‘চ’ বগির যাত্রী ছিলেন। বাবার পেছনের আসনে বসে ছিলেন তানভির। বগিতে আসনবিহনী অনেক যাত্রী ছিলেন। ভিড় ও গরম এড়াতে ভৈরব স্টেশন অতিক্রমের পর তানভির আসন ছেড়ে দরজার সামনে এসে দাঁড়ান। ট্রেনটি সেতু অতিক্রম করার সময় দরজার সামনে থেকে ছিটকে তিনি নদীতে পড়ে যান। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ।
ভৈরব নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, নিখোঁজ তরুণের সন্ধানে ভৈরব রেলসেতুর উভয় পাশে খোঁজ করা হচ্ছে।