বগুড়ায় আলুবীজের দাবিতে কৃষকদের মহাসড়ক অবরোধ

আলুবীজের দাবিতে কয়েক শ কৃষক বগুড়ার শেরপুরে মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে তাঁরা অবস্থান নেন উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারের পাশে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় তোলাছবি: প্রথম আলো

আলুবীজের দাবিতে বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় আজ বৃহস্পতিবার কয়েক শ কৃষক মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে তাঁরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারের পাশে অবস্থান নেন।

এই অবরোধকে ঘিরে মহাসড়কে দূরপাল্লার কয়েক শ গাড়ি আটকা পড়ে। এ সময় মহাসড়কজুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

অবরোধে অংশ নেওয়া অন্তত ৫০ জন আলুচাষি বলেন, নির্ধারিত দামের চেয়ে দ্বিগুণ দামেও বাজারে আলুর বীজ পাওয়া যাচ্ছে না। ডিলারদের কাছে গেলে তাঁরা জানাচ্ছেন সরবরাহ কম। এতে উপজেলার ১০ ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক আলু চাষে জমি প্রস্তুত করেও বীজের অভাবে তা পড়ে আছে।

উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, এ বছর ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে যেভাবে কৃষকেরা আলু চাষে নেমেছেন, তাতে লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়বে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর শেরপুরে অন্তত ৪ হাজার ৫০ মেট্রিক টন আলুবীজের প্রয়োজন। চাহিদার তুলনায় ব্র্যাকের বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে ২৫ শতাংশ ও বিএডিসির বীজ ৭ শতাংশ। এ ছাড়া এসিআই, ইউনিকসহ অন্যান্য কোম্পানির বীজ সরবরাহ রয়েছে শতকরা ২০ ভাগ। কৃষকেরা প্রতিবছর চাষ করে যে আলুবীজ সংগ্রহ করে রেখেছেন তা সংখ্যায় শতকরা ২০ ভাগ। উপজেলার আলু চাষের অন্তত ৮০ শতাংশ কৃষক ব্র্যাকের বীজের ওপর নির্ভরশীল।

অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া উপজেলার উচরং গ্রামের কৃষক মো. ঝান্নু, তোজাম্মেল হক, ঠান্ডা মিয়া, বেলতা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম, চাটাইল গ্রামের সাজু আহমেদ, জামাইলের মো. খোকন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ৫ থেকে ১০ বিঘা জমিতে এ বছর আলু চাষের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। চাষের জমি প্রস্তুত করে রেখেছেন তাঁরা। এখন পাচ্ছেন না আলুবীজ। আলুবীজ না পেলে কৃষকেরা আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এই বীজের দাবিতে তাঁরা মহাসড়কে অবরোধ করে পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন।

উপজেলার মান্দাইল গ্রামের দুদু আকন্দ ও চাটাইল গ্রামের মশিউর রহমান বলেন, তাঁরা ডিলারদের কাছে ধরনা দিয়ে এক কেজি বীজও পাননি। তাঁরা বলেন, ব্র্যাকের ‘এ’ গ্রেডের বীজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৯ টাকা ও ‘বি’ গ্রেডের বীজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৬ টাকা। একইভাবে বিএডিসির নির্ধারিত দামের চেয়ে উভয় বীজ দ্বিগুণ দামে গোপনে বিক্রি করা হচ্ছে।

কৃষকের এ অভিযোগ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে উপজেলার একাধিক বীজ ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান প্রথম আলোকে বলেন, কৃষকের এই অভিযোগ নিয়ে মহাসড়কে অবরোধ ও উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থানের বিষয় তিনি জেনেছেন। এ নিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানে তিনি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন।