মাগুরার শিশুটির বোনের শ্বশুরের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি

শিশু ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি: প্রথম আলো

মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণের মামলায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন শিশুটির বোনের শ্বশুর। আজ শনিবার বিকেলে মাগুরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায় তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাত দিনের রিমান্ডে থাকা মামলার মূল অভিযুক্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাঁকে আদালতে উপস্থাপন করেন। বিকেল চারটা পর্যন্ত আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারক। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আসামি একাই এ ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। তবে কখন ও কীভাবে এই ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী আজ সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে তাঁকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। তবে তিনি আদালতে কী বলেছেন, এটা আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি।’

এই ঘটনায় শিশুটির মায়ের করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি, তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলেকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অন্য তিন আসামি এখনো রিমান্ডে আছেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

১ মার্চ শিশুটি শ্রীপুরের নিজ বাড়ি থেকে পৌরসভার একটি গ্রামে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। এর আগে ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগে মামলা করেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চার মাস আগে মাগুরা পৌর এলাকার এক তরুণের সঙ্গে শিশুটির বড় বোনের বিয়ে হয়। ওই বাড়িতে বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুর থাকতেন। বিয়ের পর থেকে বড় মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তাঁর শ্বশুর। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ১ মার্চ বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় আট বছরের শিশুটি।

এজাহারে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বাদী উল্লেখ করেন, ৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই, মেঝেতে পড়ে আছে। তখন শিশুটি বড় বোনকে কিছু জটিলতার কথা জানায়। কিন্তু বড় বোন মনে করে, শিশুটি ঘুমের মধ্যে আবোলতাবোল বকছে। এরপর সকাল ছয়টার দিকে শিশুটি বোনকে আবার শরীর খারাপের কথা বলে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে বোনকে জানায়, রাতে দুলাভাই (বোনের স্বামী) দরজা খুলে দিলে তাঁর বাবা (শ্বশুর) তার মুখ চেপে ধরে তাঁর কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন