ছুটিতে বাড়ি ফিরলেন ফুটবলার রুপনা, মায়ের সঙ্গে উঠলেন নতুন ঘরে
সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের গোলরক্ষক রুপনা চাকমার মা কালাসোনা চাকমাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল আগেই। মেয়ে নেই, তাই আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ঘরে উঠতে চাননি তিনি। অবশেষে ছুটিতে মায়ের কোলে ফিরেছেন মেয়ে রুপনা। এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে থাকতে শুরু করেছেন মা-মেয়ে। নতুন ঘরে ‘বিজু’ উদ্যাপন করেছেন রুপনা চাকমা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নে ভূঁইয়ো আদাম গ্রামে রুপনা চাকমার বাড়ি। ঢালু পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা বেয়ে রুপনার বাড়িতে যেতে হয়। একটি জরাজীর্ণ বাড়িতে বসবাস করত রুপনার পরিবার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর রুপনা চাকমার জীর্ণ ঘর নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে গত সেপ্টেম্বরে রুপনার পরিবারের জন্য নতুন ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রুপনা চাকমার মাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় টিনের ছাউনি দেওয়া আধা পাকা ঘর।
রুপনা চাকমার মা কালাসোনা চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ১০ এপ্রিল মেয়ে ছুটিতে গ্রামে আসে। এরপর ঘরে ওঠার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। তাই শুভ দিনটিতে ভিক্ষু ডেকে পূজা-অর্চনার পর আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ঘরে উঠেছেন।
ছুটিতে বাড়িতে এসে নতুন ঘরে বিজু উৎসব উদ্যাপন করেছেন রুপনা চাকমা। ছুটি শেষে ২৮ এপ্রিল ঢাকায় ফিরে যাবেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর বাড়িতে এসেছি। নতুন ঘর দেখে আমি খুশি ও আনন্দিত। ঘরের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। নতুন ঘরে বিজু উৎসবে অনেক মজা করেছি।’
চার ভাইবোনের মধ্যে রুপনা সবার ছোট। রুপনা যখন মায়ের গর্ভে, তখন তাঁর বাবা মারা যান। তখন থেকে অভাব-অনটনে চার সন্তানকে বড় করেছেন রুপনার মা কালাসোনা চাকমা। রুপনার দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই বিয়ে করে আলাদা থাকেন। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মা, এক ভাই ও তাঁর স্ত্রী-সন্তান এবং রুপনা একসঙ্গে থাকেন। আগের জীর্ণ ঘরটিতে কেবল ছোট দুটি কক্ষ থাকায় ছুটিতে এলে রুপনাকে অন্য বাড়িতে থাকতে হতো।
রুপনা চাকমার পরিবারকে করে দেওয়া নতুন আধা পাকা ঘরটিতে একটি শোবার ঘর, একটি বসার ঘর ও ডাইনিংয়ের পাশাপাশি রান্নাঘর ও শৌচাগার রয়েছে।
কালাসোনা চাকমা বলেন, ঘরে টিনের নিচে ছাদ না থাকায় গরম অনেক বেশি। বিদ্যুৎসংযোগ থাকলেও এখনো ফ্যান লাগানো হয়নি, তাই গরমে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসেই রুপনা চাকমার মাকে ঘরটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ঘরটির কোনো কাজ বাকি নেই, সম্পূর্ণ শেষ করেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’