ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলবে আরও তিন দিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে আইনজীবীদের কর্মবিরতিতে চলছে না বিচারিক কার্যক্রম
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতের জেলা জজসহ দুই বিচারকের অপসারণ এবং নাজিরের শাস্তির দাবিতে আইনজীবীদের কর্মবিরতি আরও তিন দিন বাড়ানো হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে এ কর্মবিরতি। আজ সোমবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।

এদিকে এ সাধারণ সভায় আইনজীবী মোহাম্মদ কামরুল ইসলামকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি। কর্মবিরতি উপেক্ষা করে আদালতে মামলার শুনানিতে অংশ নেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয় সমিতি।

আরও পড়ুন

দাবি আদায়ে গত বুধবার থেকে কর্মবিরতিতে যান আইনজীবীরা। দাবি পূরণ না হওয়ায় আজ বেলা তিনটার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনের দ্বিতীয় তলায় আইনজীবীদের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা চলে বিকেল পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত। আলোচনাসভার শুরুতে আইনজীবী কামরুল ইসলামকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের ঘোষণা করা হয়। একাধিক আইনজীবী তাঁর আচরণে সংক্ষুব্ধ হয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির কাছে অভিযোগ করেছিলেন।

আরও পড়ুন

সভা শেষে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, তিন দিনের কর্মবিরতির মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ হবে। তাই কর্মবিরতির সময় আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বর্ধিত করেছি। বৃহস্পতিবার আইনজীবীদের আরেকটি সাধারণ সভা হবে।’ তিনি আরও বলেন, আদালতের ৫৩ জন আইনজীবী বারের সদস্য মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের অসদাচরণের বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন। তাই তাঁকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল জেলা জজ শারমিন নিগার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণ এবং নাজির মুমিনুল ইসলাম চৌধুরীর (বর্তমানে প্রেষণে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সেরেস্তাদার) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো ফলাফল পাইনি। তাই চলমান কর্মবিরতির কর্মসূচি আরও তিন দিন বাড়িয়েছি। আমরা আশা করি, জেলা জজ মহোদয় এবং নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাত শতাধিক আইনজীবীর ভবিষ্যৎ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারপ্রার্থী মানুষের কথা চিন্তা করে অতিসত্বর আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সরে যাবেন। দ্রুত আমাদের এ সমস্যা নিরসনের জন্য আইনমন্ত্রী ও আইন সচিব মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আগামীকাল তাঁরা চলে গেলে পরের দিন থেকেই আমরা আদালতে ফিরে যাব।’

আরও পড়ুন

একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তিনি মামলার শুনানিতে অংশ নেননি। তাঁর পক্ষে মুহুরি আদালতে মামলার কাগজ জমা দিয়েছেন।

গত ১ ডিসেম্বর শীতকালীন ছুটির আগে আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল। ওই দিন তিনটি মামলা না নেওয়ায় গত ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা। এরপর ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাস চলাকালে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ৪ জানুয়ারি জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন আদালতের সব এজলাসের দরজা ও প্রধান ফটকে তালা দিয়ে এক দিনের কর্মবিরতি পালন করে। ৫ জানুয়ারি আইনজীবীরা তিন কার্যদিবসের কর্মবিরতির ডাক দেন, যা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আরও তিন দিন বাড়ানো হলো।

আরও পড়ুন