জুলাই গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই মাসে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত খুনি ও দোসরদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার বিকেল সোয়া চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। ২০ মিনিট পর অবরোধ তুলে নেন তাঁরা। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের আরিচাগামী লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে বেলা সাড়ে তিনটায় ‘জুলাই গণহত্যা বিচার নিশ্চিত পরিষদ’ ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কে যান তাঁরা।
সমাবেশে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসান বলেন, ‘জুলাই হত্যার খুনিরা বিভিন্নভাবে ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। তাদের দেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। যারা বহিরাহত এনে ক্যাম্পাসে হামলা চালাল, তাদের একজনও এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব তাদের গ্রেপ্তারের আওতায় আনতে হবে। তাদের নিরাপত্তার ও মানবাধিকারের কথা চিন্তা করে সরকারের উচিত তাদের আইনের আওতায় আনা। অন্যথায় গণপিটুনির মতো ঘটনাগুলো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গণপিটুনিতে নিহত শামীম মোল্লা তাঁর জবানবন্দিতে ১৫ জুলাই হামলার ঘটনায় জড়িত একজন শিক্ষকের নাম বলে গেছেন। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার বলেন, ‘সাভার-আশুলিয়ায় যারা মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের বিচার এখনো হয়নি। ক্যাম্পাসে ১৫ জুলাই যারা ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়েছিল, তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে সারা দেশের সব খুনিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আওয়ামী লীগের দোসররা যদি মনে করে আমরা ঘরে ঢুকে গেছি, তাহলে তারা ভুল ভাবছে। আমাদের গণ–অভ্যুত্থান এখনো শেষ হয়নি।’
মহাসড়কে অবরোধ চলাকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভার এলাকায় গুলিতে নিহত শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের পিতা বুলবুল কবির, শহীদ শ্রাবণ গাজীর পিতা মান্নান গাজী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মহাসড়ক অবরোধ শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তাঁরা তিন দফা দাবি জানান। তাঁদের দাবিগুলো হলো অবিলম্বে খুনি-দোসরদের চিহ্নিত করে গঠনমূলক সরকারি মামলা নিশ্চিত করা, সাত দিনের মধ্যে সারা দেশের খুনি-দোসরদের গ্রেপ্তার নিশ্চিত করা এবং তিন মাসের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা।