আটোয়ারীতে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দুই আসামির স্বীকারোক্তি
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে (১৬) দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড়ের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অলরাম কার্জীর আদালতে তাঁরা জবানবন্দি দেন। পাশাপাশি একই আদালতে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।
এর আগে দুপুরে গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আটোয়ারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. দুলাল উদ্দিন। এ সময় আসামিরা নিজ থেকেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাঁদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
স্বীকারোক্তি দেওয়া দুই আসামি হলেন আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের মালগোবা এলাকার মো. রাজু (১৯) ও পুরাতন আটোয়ারী এলাকার সাইফুল ইসলাম (৪৮)।
ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর বাড়ি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায়। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ে। গত শনিবার রাতে আটোয়ারী উপজেলার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বন্দরপাড়া এলাকায় দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় সে। পরের দিন রোববার ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে আটোয়ারী থানায় সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আটোয়ারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. দুলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। তাঁরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
দুলাল উদ্দিন আরও বলেন, একই আদালতে ধর্ষণের শিকার কিশোরীরও ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। তাকে তার বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে গেছেন। এর আগে ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এ ছাড়া অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে বলে তিনি জানান।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বছরখানেক আগে মুঠোফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে আটোয়ারী উপজেলার মো. হাসানের (২৫) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত শনিবার বিকেলে মুঠোফোনে হাসান ওই স্কুলছাত্রীকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে পঞ্চগড় শহরে ডেকে আনেন। পরে ওই ছাত্রীকে নিয়ে হাসান তাঁর বন্ধু মো. রাজুর মোটরসাইকেলে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে রাত আটটার দিকে বন্দরপাড়া এলাকার নির্জন বাগানে নিয়ে যান। সেখানে হাসান ও রাজু মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। এ সময় ওই কিশোরী তাঁদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে ওই এলাকায় আরও পাঁচ ব্যক্তি আসেন। তখন হাসান ও রাজু মেয়েটিকে রেখে পালিয়ে যান। মেয়েটি ওই পাঁচ ব্যক্তির কাছে সাহায্য চাইলে তাঁরাও মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন।
শনিবার দিবাগত রাত একটার দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি মেয়েটিকে উদ্ধার করে পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে মেয়েটির কাছ থেকে তাঁর স্বজনদের মুঠোফোন নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করলে স্বজনেরা রাত আড়াইটার দিকে মেয়েটিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।