গাজীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুরের শাস্তির দাবিতে টঙ্গী ও পুবাইলে বিএনপির বিক্ষোভ
ভারতে পালানোর সময় গ্রেপ্তার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর সাহারা মার্কেট ও পুবাইলের মিরের বাজার এলাকায় টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কে পৃথক দুটি কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় আসাদুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিসহ ঝাড়ুমিছিল বের করা হয়।
আওয়ামী লীগের নেতা আসাদুর রহমান গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ছিলেন। ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় সিটি করপোরেশনের মেয়র না থাকায় তিনি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে আছেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোরের শার্শা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবির হাতে আটক হন তিনি। পরে তাঁর বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে শার্শা থানায় মামলা করে বিজিবি। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুরের টঙ্গী, গাছা, বাসন ও উত্তরা পূর্ব থানায় ৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি হত্যা মামলা। বাকিগুলো মারধর ও হামলার মামলা।
আসাদুর রহমানের ফাঁসির দাবিতে দুপুর ১২টার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে সাহারা মার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ ওরফে সুমন। একই সময় পুবাইল মিরের বাজার এলাকায় একই দাবিতে ঝাড়ুমিছিল করেন পুবাইল থানা বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন পুবাইল থানা বিএনপির সভাপতি মনির হোসেন।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, আসাদুর রহমান কয়েক দশক আগেও সাধারণ শ্রমিক ছিলেন। রাজনীতিতে যোগ দিয়ে তিনি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠেন। তিনি নানা কৌশলে দুই মেয়াদে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। নগরের উন্নয়নের নামে কোটি কোটি আত্মসাৎ করেন। পাশাপাশি ছাত্র-জনতার আন্দোলনেও বিরোধী ভূমিকা পালন করেন তিনি। তাঁরা এসব অপরাধে আসাদুর রহমানের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
পুবাইল থানা বিএনপির সভাপতি মো. মনির হোসেন বলেন, ‘২০১৩ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর চেয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন আমাদের বিএনপির নেতা অধ্যাপক এম এ মান্নান। কিন্তু তাঁকে মাত্র ১৮ মাস ১৯ দিন ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হয়। এই আসাদুর রহমান নানা কৌশলে, নানা ষড়যন্ত্র করে অধ্যাপক মান্নানকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব নেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের খবরে আমাদের সব নেতা-কর্মী খুশি হয়েছেন। আমরা সবাই তাঁর প্রতি ধিক্কার জানাই। পাশাপাশি তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যেসব অন্যায়, অনিয়ম করেছেন, সেসবের সঠিক তদন্ত শেষে দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনুপ্রবেশের মামলায় আজ আসাদুর রহমানকে যশোর আদালতে তোলা হয়েছে। গাজীপুর মহানগরের গাছা থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য পুলিশের একটি টিম ইতিমধ্যে শার্শায় পাঠানো হয়েছে। তবে তাঁর বাসা টঙ্গীতে হলেও আমাদের থানায় (টঙ্গী পূর্ব থানা) কোনো মামলা নেই। অন্যান্য থানার মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’