বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্ক-হেলমেট পরে হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি আবাসিক হলে গভীর রাতে মাস্ক ও হেলমেট পরে হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববদ্যালয় প্রশাসন। উপাচার্য ছাদেকুল আরেফিনের নির্দেশে রোববার বিকেলে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রক্টর মো. খোরশেদ আলম রোববার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি আবাসিক হলের নিয়ন্ত্রণ নিতে ছাত্রলীগের একটি পক্ষের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। এতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ছয়জনকে ওই রাতেই উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্র জানায়, এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদকে। কমিটির অন্য চার সদস্য হলেন বঙ্গবন্ধু হলের হাউস টিউটর রাকিবুল ইসলাম ও শের-ই-বাংলা হলের হাউস টিউটর তানভীর আহমেদ, সহকারী প্রক্টর সাদিকুর রহমান ও কম্পিউটারবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাহাত হোসাইন ফয়সাল।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) সুপ্রভাত হালদার বলেন, তদন্তে সময়ের প্রয়োজন, তা আরও বাড়ানো হবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকলেও একাধিক পক্ষ ক্যাম্পাসে সক্রিয় আছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এসব পক্ষ প্রায়ই সংঘাতে জড়াচ্ছে। চলতি বছরের শুরু থেকে গত শনিবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত চারটি বড় ধরনের সংঘাত হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার রাতে যে পক্ষ হামলা চালাতে হলে ঢুকেছিল, তারা বরিশাল সিটির মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘ সময় তারাই ক্যাম্পাসের হলগুলোর নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে বরিশাল সিটি নির্বাচনে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ জিতে যাওয়ায় তারা অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এ সময় হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের সমর্থক হিসেবে পরিচিত পক্ষটি। নির্বাচনের দেড় মাসের মধ্যেই গতকাল রাতে মাস্ক-হেলমেট পরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আবার হল পুনরুদ্ধারে আসেন সাদিকপন্থীরা।
এদিকে দুটি হলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে রোববার ক্যাম্পাসে জাহিদ ফারুকের অনুসারী পক্ষটির বিচার ও গ্রেপ্তার দাবি করে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। এ সময় হামলার বিচার ও ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বিশ্বিবদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যেকের অফিসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।