চুয়াডাঙ্গায় কাস্টমস কর্মকর্তার অপসারণ ও বিচারের দাবিতে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

চুয়াডাঙ্গায় ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বরেছবি: প্রথম আলো

চুয়াডাঙ্গায় কাস্টমস কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেনসহ যশোর অঞ্চলের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে জেলার ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বরে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ আহ্বান জানানো হয়।

চুয়াডাঙ্গা ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ইয়াকুব হোসেন হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

আরও পড়ুন

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ৬ জানুয়ারি বঙ্গ পিভিসি পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে তল্লাশির নামে তছনছ ও মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করা হয়। ঘুষের টাকা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী সেলিম আহমেদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন অতিরিক্ত কমিশনার রাকিবুল হাসান। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ ৯ জানুয়ারি থেকে প্রতিষ্ঠানটি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে। এতে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েন।

এ পরিস্থিতিতে চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই), বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, জেলা পরিবেশক সমিতিসহ মার্কেটভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ’ আজ প্রতীকী ধর্মঘট ও মানববন্ধনের ডাক দেয়। জেলা শহরের দোকানপাট বন্ধ রেখে মানববন্ধনে অংশ নেন মালিক ও শ্রমিকেরা। তবে এ সময় জরুরি ওষুধ, মাছ-মাংস, ফলমূল ও কাঁচামালের দোকানগুলো এর আওতামুক্ত রাখা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বঙ্গ পিভিসি পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজ ২৪ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। উৎপাদন পর্যায়ে জেলায় সর্বোচ্চ ভ্যাট পরিশোধকারী হিসেবে তিনবার স্বীকৃতিও লাভ করেছে। শতাধিক কর্মী সরাসরি সেখানে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। এর বাইরে পরোক্ষভাবে উপকারভোগী আরও পাঁচ শতাধিক পরিবার।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে যশোর কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের প্রিভেনটিভ দলের কাছে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ৬ জানুয়ারি অতিরিক্ত কমিশনার রাকিবুল হাসান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেনসহ ১২ সদস্যের একটি প্রিভেনটিভ দল চুয়াডাঙ্গার দৌলাতদিয়াড় এলাকায় ওই প্রতিষ্ঠানে যান। তল্লাশির নামে তাঁরা ডাকাতের মতো আচরণ করেন। স্বত্বাধিকারী সেলিম আহমেদের কাছে দাবি করা ঘুষের অর্থ না দেওয়ায় তাঁর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান অতিরিক্ত কমিশনার রাকিবুল হাসান।

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি আবদুল কাদের জগলু, সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান, সমবায় নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির নেতা সুমন খান, পরিবেশক সমিতির সভাপতি মাসুদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রিংকু জোয়ার্দ্দার, হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ পেয়ার মোহাম্মদ, চেম্বারের পরিচালক মঞ্জুরুল আলম, ব্যবসায়ী নেতা সালাহউদ্দিন, আসাদুল হক এবং বঙ্গ পিভিসি পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান প্রমুখ।