ফরিদপুরে ৫ রোহিঙ্গার এনআইডির সুপারিশ করায় ইউপি সদস্যকে অপসারণ
ফরিদপুরের সালথায় পাঁচ রোহিঙ্গার জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) আবেদনে শনাক্তকারী হয়ে সিল ও সই দিয়ে সুপারিশ করায় এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। ওই ইউপি সদস্যের নাম তাপস কুমার হোড় (৪৯)। তিনি সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় বিভাগের ইউপি-১ শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রজ্ঞাপনটি গত সোমবার ইস্যু করা।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ইউপি সদস্য তাপস কুমার হোড় অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদনে শনাক্তকারী হিসেবে স্বাক্ষর ও সিল দিয়েছেন। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে গত ২৫ নভেম্বর তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে কেন তাঁকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, তা ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জবাব দিতে বলা হয়। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর অভিভাবকের ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মসনদ ও নাগরিক সনদ দিয়ে ভোটার হওয়ার জন্য সালথা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের খোরশেদ আলীর মেয়ে দিলদারা বেগম, মনিরুল ইসলামের ছেলে নূর মোস্তফা, খোকন মিয়ার ছেলে হাফিজুর রহমান, কালা মিয়ার মেয়ে বুশরা বেগম ও আবদুল মানিকের ছেলে নূর বশার। তবে ওই নামে ফুলবাড়িয়া গ্রামে কাউকে পাওয়া যায়নি।
আবেদনে তাঁরা যে জন্মসনদগুলো জমা দেন, সেগুলো কিশোরগঞ্জের নিকলি উপজেলার ছাতিরচর ইউপি থেকে করা ছিল। তাঁদের নামে গত ১০ সেপ্টেম্বর বল্লভদী ইউপি থেকে নাগরিক সনদ দেওয়া হয়। এতে সই করেন ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুজ্জামান। জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদনপত্রে শনাক্তকারী হিসেবে সই করেন তাপস কুমার হোড়। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ইউএনওর নির্দেশে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওই পাঁচটি আবেদন বাতিল করে দেন।
ইউএনও মো. আনিচুর রহমান বলেন, তদন্তে এ জালিয়াতির ঘটনায় ইউপি সদস্য তাপস কুমার হোড়ের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়ায় তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় অন্য কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ–সংক্রান্ত প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।