২১ দিন ধরে নিখোঁজ, ছেলের সন্ধানে বারবার থানায় যাচ্ছেন বাবা
নিখোঁজের ২১ দিন পরও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কিশোর মুহতাসিম বিল্লাহর (১৫) সন্ধান পায়নি পুলিশ। ছেলের চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে মুহতাসিমের পরিবার। এর মধ্যে সন্দেহভাজন একজনকে দুই দফা আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
মুহতাসিম বিল্লাহর বাবা নুর উদ্দিন বলেন, তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছোট কুমিরা কলেজ রোড এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। গত ২৮ নভেম্বর তার বড় ছেলে মুহতাসিম ফজরের নামাজ পড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। এরপর আর ফিরে আসেনি। তিনি ঘটনার দিন থেকে আত্মীয়স্বজন, চেনা-পরিচিত সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ছেলেকে কোথাও না পেয়ে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
নুর উদ্দিন বলেন, ‘ছেলেকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। প্রতিদিন থানায় যাচ্ছি। কিন্তু পুলিশ এখনো কোনো খবর দিতে পারেনি। এখন চাকরি-বাকরি, সংসার কোনো কাজে মন বসছে না। ছেলের জন্য হাহাকার লাগছে। কার কাছে গেলে ছেলেকে পাব, সেটাই বুঝতে পারছি না।’
মুহতাসিম বিল্লাহ উপজেলার ছোট কুমিরার নুরিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা নুর উদ্দিন লতিফা সিদ্দিকী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় সহকারী প্রধান শিক্ষক। নুর উদ্দিনের দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে মুহতাসিম বিল্লাহ সবার বড়।
নুর উদ্দিনের পাশের ফ্ল্যাটে থাকেন লতিফা সিদ্দিকী ডিগ্রি কলেজের আইসিটি বিষয়ের প্রভাষক মো. হাসান আলী। তিনি বলেন, এলাকার বখাটেপনার বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার শিক্ষক নুর উদ্দিন। ফলে কোনো বখাটে তাঁর ছেলেকে অপহরণ করে থাকতে পারে। ছেলের জন্য পাগলপ্রায় নুর উদ্দিন সবখানে খোঁজ করছেন।
পুলিশ জানায়, মুহতাসিম বিল্লাহ নিখোঁজের পর আরমান নামের একজনকে আটক করে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশ। নিখোঁজের বাবা নুর উদ্দিনের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করেছিলেন প্রতারক আরমান। তবে তাঁর কাছে কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ওই কিশোরকে উদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। সন্দেহভাজন একজনকে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ছেড়ে দিলেও তাঁকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে।