নিখোঁজের ৪ দিন পর মিলল লাঠিয়াল সর্দার হাফিজুরের গলাকাটা লাশ
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রিশখালী গ্রামের হাফিজুর রহমান (৪০) ৫ অক্টোবর রাতে নিখোঁজ হন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় গলাকাটা অবস্থায় পলিথিনে মোড়ানো মাটির নিচে পুঁতে রাখা তাঁর লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের ধারণা ঘটনাস্থলের একটু দূরে তাঁকে হত্যা করে কেষ্টপুর গ্রামের কাটাখালী খালের পারে পুঁতে রাখা হয়েছিল।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের দাবি ভাড়াটে খুনি দিয়ে হাফিজুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। সম্প্রতি একটি বিষয় নিয়ে এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। তখন তাঁরা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তারপর এই ঘটনা ঘটেছে।
হাফিজুরের ভাই জাফিরুল ইসলাম বলেন, হাফিজুর রহমান ১০ বছর মালয়েশিয়ায় ছিলেন। এরপর ১১ বছর ধরে বাড়িতে এসে কৃষিকাজ করছেন। তিনি ফুটবলার ও লাঠি খেলার সর্দার। হরিণাকুণ্ডু উপজেলা দলের গোলরক্ষক ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় তাঁর ভাবি পলি খাতুন স্বামীকে ফোন দিয়ে ছেলের জন্য খাবার আনতে বলেন। এটিই ছিল তাঁর সঙ্গে স্ত্রীর শেষ কথা। ওই দিন বাড়িতে ফিরতে দেরি হওয়ায় রাত নয়টার দিকে ফের তাঁর মুঠোফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে তিনি ৭ অক্টোবর হরিণাকুণ্ডু থানায় একটি ডায়েরি করেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল দুপুরে কেষ্টপুর গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি ওই খালে মাছ ধরতে যান। তাঁদের একজন পানির নিচে মুঠোফোন ফোন পান। ওই মুঠোফোনের সূত্র ধরেই তার পরিবারের লোকজন খালে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে নিহত ব্যক্তির পায়ের দাগ দেখে আরও নিশ্চিত হন এই খালেই হাফিজুর রহমানের লাশ পাওয়া যাবে। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তাঁরা খালে অভিযান চালিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেন। তাঁরা ধারণা করছেন, হত্যাকারীরা কৌশলে হাফিজুর রহমানকে ডেকে এনে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত দেড়শ গজ দূরে হত্যা করে। সেখানে রক্তের চিহ্ন রয়েছে। হত্যার পর পলিথিনে পেঁচিয়ে লাশ খালের ধারে নিয়ে মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছে। তদন্ত করে দ্রুত জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
জাফিরুল ইসলাম বলেন, হাফিজুর রহমান কোনো বিরোধের মধ্যে ছিলেন না। তবে পাঁচ মাস আগে একটি মন্তব্য করা নিয়ে তাদের এলাকার এক ব্যক্তির সঙ্গে বিরোধ হয়। এ সময় তর্কের একপর্যায়ে তাঁকে দুটি থাপ্পড় মারে। এরপর তিনি দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। হাফিজুর রহমানের রিশাদ (১০) ও তামিম (৪) নামের দুই ছেলে আছে।