খুলনায় শীতের সকালে বৃষ্টির ছটা

বৃষ্টির মধ্যেই কাজে বের হয়েছেন অনেকে। আবু নাসের হাসপাতাল মোড় এলাকা, খুলনাছবি: সাদ্দাম হোসেন

বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল কয়েক দিন আগ থেকেই। তবে গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্তও বৃষ্টির কোনো আভাস ছিল না। আজ বুধবার সকাল আটটার দিকে যেন হঠাৎই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি, আবার কখনো মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়েছে সকাল সোয়া ১০টা পর্যন্ত। এখনো কালো মেঘে ঢেকে আছে আকাশ। যেকোনো সময় আবার বৃষ্টি শুরু হতে পারে।

খুলনা আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত আছে। পাশাপাশি পুবালি লঘুচাপের বর্ধিতাংশ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এ ছাড়া মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এ কারণে আজ খুলনা বিভাগে বৃষ্টি হচ্ছে।

এই আবহাওয়াবিদ বলেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত খুলনায় বৃষ্টি হয়েছে ১৯ মিলিমিটার। আগামী তিন দিন এভাবে থেমে থেমে বৃষ্টি হতে পারে। আজ সকাল ৬টায় খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আকাশে মেঘ থাকায় তাপমাত্রা বাড়ছে বলে জানান তিনি।

এদিকে সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকেরা। দুর্ভোগ বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষের। অধিকাংশই কাজে যেতে পারেননি। এদিকে বেশি বৃষ্টি হলে রবিশস্যের ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

সকাল ৯টার দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছিল। তখন খুলনা নগরের নিরালা, গল্লামারী ময়লাপোতা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে যানবাহন ও মানুষের সংখ্যা অনেক কম। নিতান্তই যাঁরা বের হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই অফিসগামী। তবে যানবাহন কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। এ সুযোগে যানবাহনগুলোও ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে।

নিরালা আবাসিক এলাকায় সকাল পৌনে ৯টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা নিয়ে হেঁটে হেঁটে মেয়েকে স্কুলে দিতে বের হয়েছিলেন মাসুদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় কোনো রিকশা পাওয়া যাচ্ছিল না। এ কারণে হেঁটে হেঁটেই আমরা স্কুলের দিকে যাচ্ছি। তবে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকায় বেশ খানিকটা ভিজে গেছি। বৃষ্টি বাড়বে বুঝতে পারলে মেয়েকে স্কুলে নিয়ে আসতাম না।’

এদিকে বৃষ্টির মাত্রা বেশি হলে রবিশস্যের ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। তবে এ বৃষ্টি বোরো আবাদের জন্য খুবই ভালো। খুলনায় বর্তমানে ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান, ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে শর্ষে, প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী, ৪০০ হেক্টরে আলু এবং শাকসবজি আছে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে।

খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপপরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত যে ধরনের বৃষ্টি হয়েছে, তাতে ফসলের খুব বেশি ক্ষতি হবে না। এ সময়ের বৃষ্টি বোরো আবাদের জন্য ভালো। তবে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে মাঠে থাকা রবিশস্যের ক্ষতি হতে পারে।