এলাকায় ফিরে কনকচাঁপা বললেন, ‘দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব’
সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে আবারও রাজনীতিতে সরব হয়েছেন শিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর ও সদরের একাংশ) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পী।
দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সিরাজগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী হন তিনি। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাধায় কনকচাঁপা নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত এলাকায় যেতে না পেরে তিনি পার্শ্ববর্তী জেলা বগুড়ায় সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কনকচাঁপা নিজ এলাকায় ফিরে কার্যক্রম শুরু করেছেন। সম্প্রতি তিনি বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। শনিবার বেলা ১১টার দিকে কনকচাঁপা কাজীপুর উপজেলার চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে দুই হাজার কম্বল বিতরণ করেন।
ওই অনুষ্ঠানে কাজীপুরবাসীর পাশে থাকার প্রত্যয় জানিয়ে রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা বলেন, ‘আমার শৈশব কেটেছে এই কাজীপুরের মাটিতে। এখানেই মিশে আছে আমার অনেক স্মৃতি। আমার পৈতৃক বাড়িটি যমুনায় বিলীন হয়েছে। আমি মনে করি, এই এলাকার প্রতিটি বাড়িই আমার নিজের বাড়ি। কাজীপুরে আমার নিজ নামে কোনো বাড়ি নেই। তাই আমি দ্রুত কাজীপুরবাসীর পাশে থাকার জন্য একটি বাড়ি নির্মাণ করব।’
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে আমি কাজ শুরু করেছি। এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করে দিয়েছি। আমার বাসাতেও দলীয় নেতাদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছি।রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা, কণ্ঠশিল্পী ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য
রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জাসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে তিন বছরের জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য নিযুক্ত করেছে।
নিজ এলাকায় রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হওয়ার কথা জানালেন রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। রোববার দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের আগে আমরা কেউ কোনো কাজ করতে পারিনি। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে আমি কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারতাম না। সিম কার্ড ঢোকানোর সঙ্গে সঙ্গে সেটা ব্লক করা হতো। সব জায়গায় আমাকে নিগৃহীত করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে আমি কাজ শুরু করেছি। এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করে দিয়েছি। আমার বাসাতেও দলীয় নেতাদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছি। এসব বৈঠকে নেতা-কর্মীরা আমাকে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানিয়েছেন। কাজীপুর ও সিরাজগঞ্জবাসীর সমর্থন এবং দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, নির্বাচনে নিশ্চয়ই অংশগ্রহণ করব।’
কাজীপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ জাহিদ হাসান বলেন, ‘বর্তমানে কনকচাঁপা রাজনীতিতে সম্পূর্ণ সক্রিয় এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। তাঁর সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক হচ্ছে। দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা দফায় দফায় তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন।’