শহীদ আবু সাঈদের বাবা অসুস্থ, নেওয়া হচ্ছে ঢাকায়
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আজ রাতে তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে । সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আবু হোসেন বলেন, তাঁর বাবা মকবুল হোসেন তিন দিন আগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রংপুরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন। সেখানে গত সোমবার রাতে তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত (স্ট্রোক) রোগে আক্রান্ত হন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁর বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, মকবুল হোসেনের হৃদ্যন্ত্র, কিডনিসহ নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে।
আবু সাঈদের বাবার অসুস্থতার খবর শুনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শওকাত আলী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রংপুর সিএমএইচের অ্যাম্বুলেন্সে শহীদ আবু সাঈদের বাবাকে সৈয়দপুর এয়ারপোর্টে নেওয়া হচ্ছে। তিনিও সৈয়দপুর পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে যাচ্ছেন। সৈয়দপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ১৬ জুলাই গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ। তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হন অনেক মানুষ, এতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন।
গত ২৮ নভেম্বর আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের হাতে শহীদ আবু সাঈদ ফাউন্ডেশনের সনদ তুলে দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় আবু সাঈদের বাবাকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি নিজেকে রংপুরের সন্তান বলে মনে করেন। কারণ, তিনি জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদ আবু সাঈদের সাহস ও আত্মত্যাগে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত।