সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে সপ্তম দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয় লেনে যানজট সৃষ্টি হয়।
তবে আধা ঘণ্টা পর সোয়া চারটার দিকে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। এরপর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে গতকাল সোমবার সোয়া চার ঘণ্টা, রোববার দুই ঘণ্টা, গত সপ্তাহের একাধিক দিন তাঁরা সড়ক অবরোধ করেছিলেন।
আজ বেলা পৌনে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। পরে সেখান থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি হলো সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা।
অবরোধকালে সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামের (ইমন) সঞ্চালনায় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘যখন মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালু হয়, তখন বলা হয়েছিল—এটি অন্তর্বর্তীকালীন সিদ্ধান্ত। এত বছর পরও সেই অন্তর্বর্তীকালীন সিস্টেম পার হয়নি? এখন মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্মের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা প্রথা বহাল রাখার যৌক্তিকতা নেই। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য, আমরা কোটা প্রথার যৌক্তিক সংস্কার চাই।’
বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। কাল বুধবার সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা পুনর্বহালের বিষয়ে আদালতে শুনানি আছে। সেখানে যদি ছাত্রসমাজের যৌক্তিক দাবি উপেক্ষা করে আমাদের বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হয়, তাহলে পুরো দেশ অচল করে দেওয়া হবে।’