জাহাজে ৭ খুনের মামলায় আদালতে জবানবন্দি দিলেন একমাত্র আসামি আকাশ মণ্ডল
মেঘনা নদীতে সার বহনকারী এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাত খুনের আসামি আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান (২৬) রিমান্ড শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ সময় তিনি এই খুনের বিষয়ে নানা তথ্য তুলে ধরেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে নৌ পুলিশ আসামি আকাশ মণ্ডলকে চাঁদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোরশেদুল আলমের আদালতে হাজির করে। এরপর প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী আকাশ মণ্ডল জবানবন্দি প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কুহিনুর রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পরে নৌ পুলিশ আকাশকে সঙ্গে করে ঘটনাস্থল মেঘনা নদীর মাঝেরচর এলাকা, চাঁদপুর শহর ও বাগেরহাটে নিয়ে যান। এসব জায়গায় গিয়ে তাঁরা খুনের ঘটনায় আকাশের সরেজমিন বিবরণ নেন, ঘটনার আলামতসহ নানা বিষয় নিশ্চিত হন। বিশেষ করে কীভাবে একা এত বড় সারবোঝাই জাহাজটি তিনি চালালেন, সেটি তাঁরা আকাশকে দিয়ে জাহাজ চালিয়ে নিশ্চিত হন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কুহিনুর বলেন, ‘চাঁদপুরে জাহাজে সাত খুনের ঘটনা চাঞ্চল্যকর এবং সারা দেশে আলোচিত। জবানবন্দি ও রিমান্ডে আকাশ মণ্ডলের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি এ ঘটনার প্রধান হোতা হিসেবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুতই এর বিচারকাজ শুরু হয়ে দ্রুতই শেষ হবে।’
গত ২৫ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চাঁদপুর নৌ পুলিশের পরিদর্শক মো. কালাম খান আকাশ মণ্ডলকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত তাঁর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২৪ ডিসেম্বর বেলা তিনটার দিকে চট্টগ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জগামী ৭২০ টন সারবোঝাই এমভি আল বাখেরা জাহাজ থেকে পাঁচজনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত জুয়েল (৩৫) এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে ২৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে চারটা পর্যন্ত নৌ পুলিশ ও র্যাব-১১ অভিযান চালায়। ওই অভিযানে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে আকাশ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন ২৫ ডিসেম্বর রাতে জাহাজের অন্যতম মালিক মাহবুব মোর্শেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চাঁদপুরের হাইমচর থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় ওই দিন আকাশকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে নিয়ে রিমান্ড আবেদন জানায় পুলিশ।