নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১১ দফা দাবিতে প্রধান ফটক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
১১ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, প্রশাসনিক ভবন ও শিক্ষকদের ক্যানটিনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুর ১২টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে আটকে পড়েন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ–উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ কেউই ক্যাম্পাসে না থাকায় প্রক্টর মো. আনিসুজ্জামান শিক্ষক নেতাদের নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা ১১ দফা দাবি সংবলিত একটি কাগজ তাঁকে দিয়েছেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আলোচনা করে দাবি-দাওয়ার বিষয়ে পরবর্তী সময় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—নিরাপদ পরিবহনব্যবস্থা; নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার; সুলভ মূল্যে নিরাপদ খাবারের ব্যবস্থা; আবাসিক হল ও কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার খাদ্যে ভর্তুকি; মানোন্নয়ন পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার; শ্রেণিকক্ষের সংকট নিরসন; পুরো ক্যাম্পাসকে দ্রুতগতির ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসা; বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত ব্যক্তিদের অবাধ প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে চলাচলের সুযোগ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসের নানা সমস্যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যৌক্তিক দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বরাবরই কালক্ষেপণের পথে হেঁটেছে। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন। দাবি বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীরা আকস্মিকভাবে আন্দোলন শুরু করেছেন। পারিবারিক কাজে তিনি ঢাকায় আছেন। দাপ্তরিক কাজে উপাচার্য ও সহ–উপাচার্য ক্যাম্পাসের বাইরে। তিনি ও উপাচার্য ক্যাম্পাসে ফিরলে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করে পর্যায়ক্রমে সেগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এদিকে শিক্ষার্থীরা ক্যানটিনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার সময় সেখানে কয়েকজন শিক্ষক দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। তখন তাঁদের তড়িঘড়ি ক্যানটিন থেকে বের করে দেওয়া হয়। কয়েকজন শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়ার সঙ্গে বরাবরই শিক্ষকেরা একমত ছিলেন। কিন্তু শিক্ষকদের খাওয়া থেকে বঞ্চিত করে দাবি আদায়ের যে কৌশল তারা নিয়েছে, সেটি কোনোভাবে তাদের কাছ থেকে কাম্য হতে পারে না।