পদ্মায় নিখোঁজ শিশুর সন্ধান দ্বিতীয় দিনেও মেলেনি, ঈদের আনন্দে নেই পরিবারে
‘গতকাল (রোববার) বিকেলে বাড়ির কাছাকাছি পদ্মা নদীর ৫ ও ৬ নম্বর ফেরিঘাটের মাঝামাঝি স্থানে আমার কাপড় ধুতে যান মা। সঙ্গে ছোট ভাই তুহিনও (৫) ছিল। কাপড় ধুয়ে গোসল শেষে মা খেয়াল করেন, তুহিন নেই। তখনই বুঝতে পারেন নদীতে পড়েছে সে। এখন আমাদের কোনো ঈদ নেই, আনন্দও নেই।’
পদ্মার পানিতে ডুবে নিখোঁজের দুই দিন পরও শিশু তুহিনের সন্ধান না মেলায় আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন তার বড় ভাই তুষার প্রামাণিক। নিখোঁজ তুহিন ওরফে সাব্বির প্রামাণিক বাহির চর দৌলতদিয়া আমিরুল ইসলাম ও তাছলিমা বেগম দম্পতির ছোট সন্তান। গত রোববার দুপুরের পর মায়ের সঙ্গে নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে।
তুহিন নিখোঁজের দ্বিতীয় দিন আজ ঈদের দিন বেলা ১১টার দিকে সন্ধানে পদ্মা নদীতে অভিযান চালান মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট ডুবুরি ইউনিটের চার সদস্য। বেলা একটার পর তাঁরা উদ্ধার অভিযান বন্ধ ঘোষণা করেন। এ সময় স্থানীয় উৎসুক মানুষের ভিড় দেখা যায়।
উদ্ধার অভিযানে ছেলেকে ফেরত পাওয়ার আশায় ফেরিঘাট এলাকায় আসেন তুহিনের মা তাছলিমা বেগম ও বাবা আমিরুল ইসলাম। তাছলিমা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, ‘তোমরা আমার ব্যাটারে আইনা দাও। আমার বুকের মানিকরে তোমরা আইনা দাও। ওরে ব্যাটা, তুই কই গেলি রে।’
তুহিনের বড় ভাই তুষার প্রামাণিক ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে গত শনিবার রাতে বাড়ি আসেন। তুষার প্রামাণিক বলেন, ‘আমাকে পেয়ে তুহিনের আনন্দ যেন ধরে না। এখন সব শেষ হয়ে গেছে, ভাই।’
গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত পাংশা উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনমাস্টার রিমেল আহমেদ জানান, রোববার বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত নদীর তলদেশে সন্ধান চালায় ডুবুরি দল। তবে অন্ধকারের কারণে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে আবার শুরু করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, স্রোতের টানে ভাটির দিকে চলে গেছে তুহিনের মরদেহ।