পুলিশকে পিটিয়ে আসামি ছিনিয়ে নিলেন এলাকাবাসী, গ্রেপ্তার ১৩
ঢাকার অদূরে সাভারে পরোয়ানা থাকা এক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে পুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) মারধরের শিকার হয়েছেন। আহত ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় দায়ের হওয়া মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দা মো. শাহজাহান মিয়া (২৭), আসাদুল ইসলাম (২৪) ও মো. ফারুকুল ইসলাম (২৫), রংপুরের মেহেদী হাসান (২১), গোপালগঞ্জের নাজমুল ইসলাম (৩২), দিনাজপুরের মো. ওমর ফারুক (২৩), জয়পুরহাটের মো. মনসুর কবিরাজ (৩৮), লালমনিরহাটের ফারুক উদ্দিন (২১), দিনাজপুরের সাজ্জাদ হোসেন (১৯) ও নাসিরুল ইসলাম (২২), কুড়িগ্রামের মাইদুল ইসলাম (৪৪), শরীয়তপুরের আমিনুল ইসলাম (৩৭) ও কিশোরগঞ্জের মো. হানিফ ভূঁইয়া (২৬)। তাঁরা সবাই আশুলিয়ায় ভাড়া থাকেন।
পুলিশকে মারধরের ঘটনায় দায়ের মামলাটির এজাহার থেকে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাভার উপজেলার আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় চেক প্রত্যাখ্যানের (ডিজঅনার) ঘটনায় দায়ের হওয়া পূর্বের একটি মামলার আসামি রাকিব ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারের জন্য যান আশুলিয়া থানা-পুলিশের একটি দল। পরে তাঁরা রাকিব ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারের পর হাতকড়া পরিয়ে থানার আনার চেষ্টা করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ৬০-৬৫ জন ব্যক্তি পুলিশকে বাধা দেন। তাঁরা রাকিবকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর হামলা চালান তাঁরা। একপর্যায়ে রড দিয়ে আশুলিয়া থানার এসআই মো. রবিউল ইসলামে মাথার পেছন দিকে ও ডান পায়ে আঘাত করেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মারধরকারীরা রাকিবকে হাতকড়া পরা অবস্থায় পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন। খবর পেয়ে আশুলিয়া থান থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে রাকিবসহ হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে আহত পুলিশ সদস্য রবিউলকে ধামরাই ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
রাকিব ভূঁইয়ার ভগ্নিপতি আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাকিব ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করতে আসে পুলিশ। এ সময় রাকিব মাঠে ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন। এসআই রবিউল ইসলাম মাঠে এসে রাকিবকে হাতকড়া পরান। হাতকড়া পরানোর কারণ নিয়ে রাকিবসহ সেখানে উপস্থিত কয়েকজনের সঙ্গে পুলিশের বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কিও ঘটনা ঘটে। পুলিশ রাকিবকে নিতে পারেনি।
আবুল কালাম বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর রাকিবদের বাসার পাশে আমার একটি বাসা আছে, সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। ওই বাসা থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় পোশাক কারখানার নিরীহ ১৫ জন শ্রমিককে ধরে নিয়ে যান। নির্দোষ লোকগুলাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। ওসি সাহেবকে অনুরোধ করেছিলাম ভিডিও আছে, সেই ভিডিও ফুটেজ দেখে যাঁরা জড়িত, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হোক। কিন্তু বিনা অপরাধে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হলো।’
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় এবং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে একজন এসআই আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আহত এসআই মো. রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে আজ শনিবার সকালে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০-৩৫ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় গতকাল রাতে আটক ১৩ জনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।