সিলেটে চিনি চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রদল নেতার ভাইসহ আটক ৩

‌সিলেটে চোরাচালানের ৫০ বস্তা চিনিসহ গ্রেপ্তার তিনজন
ছবি: প্রথম আলো

ভারতীয় চোরাচালানের চিনি ভাগ-বাঁটোয়ারায় দলের নাম ব্যবহার না করতে সতর্ক করে পোস্ট দিয়েছিলেন সিলেট সদর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রুফিয়ান আহমদ। এবার এই ছাত্রদল নেতারই ভাইসহ তিনজনকে চোরাচালানের ৫০ বস্তা চিনিসহ আটক করেছে পুলিশ। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের শাহপরান থানা এলাকার কানুগুল গ্রামের মো. সুফিয়ান (৪১), জৈন্তাপুরের খান চা-বাগানের অঞ্জন রায় (৩৫) এবং হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের বড় মাকুয়া গ্রামের মো. কলিম উদ্দিন (৩৪)। এর মধ্যে সুফিয়ান আহমদ ছাত্রদল নেতা রুফিয়ান আহমদের বড় ভাই। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেটের বটেশ্বর বাজার এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

এর আগে ৩১ আগস্ট ফেসবুকে রুফিয়ান আহমদ লিখেছিলেন, ‘তামাবিল রোডে কেউ চিনির লাইন দিচ্ছেন, আবার কেউ আটকাচ্ছেন। দিন শেষে এক টেবিলে বসে সমঝোতা করে ভাগ–বাঁটোয়ারা করছেন। ভাই যা মন চায় করেন, আল্লাহর ওয়াস্তে আমি বিএনপির অমুক, আমি বিএনপির তমুক এসব বইলেন না, আপনারা কী আমরা কমবেশি জানি। আর আরেকটা কথা, অতিরিক্ত সিনিয়রগিরি দেখাইতে আইসেন না, ১৭ বছরের শ্রম–ঘাম আর রক্ত যদি একবার আপনাদের ওপরে প্রয়োগ হয়, তখন কিন্তু আর কোনো অপশন থাকবে না।’

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় চিনি চোরাচালানের মাধ্যমে এনে সিলেটে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি চলছে—গোপন মাধ্যমে এমন সংবাদ পায় পুলিশ। এ খবরের ভিত্তিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় বটেশ্বর বাজারে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ৪৯ কেজি ওজনের ৪০ বস্তা ও ৩০ কেজি ওজনের ১০ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ তিনজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারত থেকে চিনি চোরাচালানের সঙ্গে তৎকালীন ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়িত ছিলেন। ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর চিনি চোরাচালানের সঙ্গে এরই মধ্যে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠছে।

এ ব্যাপারে সিলেট সদর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রুফিয়ান আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি শুক্রবার ঢাকায় ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে এলাকায় ফিরে বিষয়টি শুনতে পান। এসব ঘটনার সঙ্গে তাঁর ভাই জড়িত, সেটি তিনি জানতেন না। পরে জেনেছেন, বটেশ্বর বাজারে ছোটখাটো ব্যবসা করতেন তাঁর ভাই। পুলিশ প্রথমে তাঁদের আটকের পর ছেড়ে দিয়েছিল। সিলেটের শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফোন দিয়ে সন্ধ্যায় তাঁকে বিষয়টি জানান, এ ব্যাপারে সহযোগিতার জন্যও বলেন। পরে তিনি নিজে তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়েছেন।

সিলেট শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ভারতীয় চিনির চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকায় আটক তিনজনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।