সুনামগঞ্জে সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ ৯৯ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা
সুনামগঞ্জে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক তিন সংসদ সদস্যসহ (এমপি) ৯৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা হয়েছে। এতে সুনামগঞ্জের সাবেক তিন পুলিশ কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। হাফিজ আহমদ (৪৫) নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে সুনামগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আদালতে আজ সোমবার মামলাটি করেন।
হাফিজ আহমদ দোয়ারাবাজার উপজেলার এরোয়াখাই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সুনামগঞ্জ পৌর শহরে গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী জহুর আলীর বড় ভাই।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল হক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের বিচারক নির্জন মিত্র মামলাটি আমলে নিয়েছেন।
আসামির তালিকায় ১ নম্বরে আছেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদ্য অপসারিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা। এ ছাড়া আছেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি মুহিবুর রহমান, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাবেক দুই এমপি রনজিত চন্দ্র সরকার ও মোয়াজ্জেম হোসেন, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নাদের বখত, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল হুদা, জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, দিরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রদীপ রায়, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফতাব উদ্দিন, সুনামগঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস এবং সদর মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সোয়েব চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জুবের আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দীপঙ্কর কান্তি দে, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান প্রমুখ। এর বাইরে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি আছেন আরও ১৫০–২০০ জন।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, আসামিরা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী। গত ৪ আগস্ট সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে বাদীর ছোট ভাই জহুর আলী, রিপন মিয়াসহ অন্যরা সুনামগঞ্জ পৌর শহরের স্টেশন রোডের ফুলকলি শোরুমের সামনে জড়ো হন। একই সময়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে হামলা চালান। হামলাকারীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও এলোপাতাড়ি গুলিতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। একপর্যায়ে জহুর আলীর বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচে গুলি করেন আসামি সুনামগঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাশ। পরে শহরের আরপিননগর এলাকায় একটি অটোরিকশার ভেতরে আশ্রয় নেওয়া শিক্ষার্থী রিপন মিয়াকে টেনে বের করে এনে আসামি রিয়াজ উদ্দিন তাঁর পায়ে গুলি করেন। আসামিদের হামলা ও এলোপাতাড়ি গুলিতে অনেক পথচারী ও সাধারণ মানুষ আহত হন। আহত ব্যক্তিরা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও আসামিরা বাধা দেন।