ঘুঘুকে দৃষ্টিহীন করে পাখি শিকার, উদ্ধার করলেন স্বেচ্ছাসেবীরা
চিকন সুতা দিয়ে সেলাই করে বাঁধা ছোট্ট দুটি চোখ। তার ওপর আবার আঠা দিয়ে আটকানো। এভাবেই দুটি ঘুঘু পাখিকে দৃষ্টিহীন করা হয়। এরপর ওই দুটি ঘুঘুকে বেঁধে জাল পেতে আরও পাখি শিকার করছিলেন একদল শিকারি।
খবর পেয়ে আজ বুধবার বিকেলে সুন্দরবনসংলগ্ন বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামের একটি মাঠ থেকে ঘুঘু পাখি দুটিকে উদ্ধার করেছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা। তবে স্বেচ্ছাসেবীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান শিকারিরা।
পাখি দুটিকে উদ্ধারের পর চোখ লাগানো আঠা তুলে ও সুতার সেলাই কেটে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করেছে শরণখোলা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কমিটি। কমিটির সভাপতি শেখ নাজমুল ইসলাম জানান, মুঠোফোনের মাধ্যমে তিনি খবর পান একদল শিকারি চক্র ঘুঘুর দুই চোখ আটকে জালের ফাঁদ পেতেছে। তাৎক্ষণিক তিনি তাঁদের কমিটির সদস্য শাহিন হাওলাদারকে সেখানে পাঠান। তিনি স্থানীয় কিছু তরুণকে নিয়ে সেখানে পৌঁছালে শিকারি চক্রটি ঘুঘু দুটিকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘মূলত গ্রামের মাঠে ওই দুটি ঘুঘু পাখিকে আটকে রাখা হয়েছিল অন্য পাখি ধরতে। সেখানে এই ঘুঘু দুটিকে দেখে ঘুঘু বা অন্য পাখি এলে জালে আটকা পড়ত। বাঁশ বা লম্বা লাঠি মাথায় বেঁধেও এভাবে পাখি দিয়ে পাখি ধরা হয়। আমরা পাখি দুটিকে উদ্ধারের পর চিকিৎসা দিয়ে অবমুক্ত করেছি। বিষয়টি বন বিভাগকেও জানানো হয়েছে।’
শীতের শুরু থেকেই সাউন্ড বক্সে পাখির ডাক বাজিয়ে ও পাখির ফাঁদ পেতে পাখি ধরার ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ অঞ্চলে অনেক বেড়েছে। ফলে ঘাটেমাঠে এখন পাখির আনাগোনা আগের চেয়ে কমেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।
জানতে চাইলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পাখিসহ বন্য প্রাণী রক্ষায় স্থানীয় ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। বন্য প্রাণী রক্ষায় স্থানীয়ভাবে কাজ করা ব্যক্তিরা এ ধরনের বিষয়ে তাঁদের জানান। এরপর তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। এ বিষয়ে খেয়াল রাখা হবে।