সড়কে প্রাণ হারানো নাদিয়ার শেষঘুম হলো গ্রামের বাড়িতে
রাজধানীতে বাসচাপায় নিহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাদিয়া সুলতানার (১৯) লাশ আজ সোমবার সকালে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব নেতা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। এরপর জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নাদিয়ার মৃত্যু হয়। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মাসি বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।
ক্লাস করতে এক সপ্তাহ আগে নারায়ণগঞ্জের বাসা ছেড়ে উত্তরার একটি মেসে ওঠেন নাদিয়া। তাঁর বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন নারায়ণগঞ্জে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ২০ বছর ধরে তাঁরা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বসবাস করছেন।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, গতকাল ক্লাস না থাকায় এক বন্ধুর সঙ্গে তাঁর মোটরসাইকেলে করে বই কিনতে উত্তরার বাসা থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় যাচ্ছিলেন নাদিয়া। কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় তাঁদের মোটরসাইকেলটিকে একটি বাস ধাক্কা দেয়। এতে রাস্তায় ছিটকে পড়েন তাঁরা। এ সময় বাসচাপায় ঘটনাস্থলেই মারা যান নাদিয়া।
আজ সকালে নাদিরার লাশ রাঙ্গাবালী গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। নাদিয়ার অশীতিপর দাদা ধলু মৃধা নাতির লাশ দাফনের সময় কবরের পাশে হাজির হন। এ সময় তাঁর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিল।
নাদিয়ার মা পারভীন আক্তার কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। একটু পরপর মেয়ের কবরের দিকে ছুটে যাচ্ছিলেন তিনি। স্বজনেরা তাঁকে নিবৃত্ত করছিলেন।
এ সময় নাদিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন মেয়ের মধ্যে সবার বড় নাদিয়া। আমাদের সবার স্বপ্নই ছিল, নাদিয়া লেখাপড়া করে প্রতিষ্ঠিত হবে, দুই বোনের দায়িত্ব নেবে। আমাদের সব স্বপ্ন এখন মাটির নিচে শুয়ে আছে।’