বিপর্যয় কাটিয়ে এবার এসএসসিতে দেশসেরা যশোর শিক্ষা বোর্ড
গত বছরের বিপর্যয় কাটিয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেশসেরা হয়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। এ বছর যশোর বোর্ড থেকে ২০ হাজার ৭৬১ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৯২ দশমিক ৩৩, যা দেশের আটটি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সেরা।
শিক্ষা বোর্ডের ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯২৬ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৭ পরীক্ষার্থী। ২০২৩ সালে এই শিক্ষা বোর্ডে ফল বিপর্যয় ঘটে। পাসের হার ছিল ৮৬ দশমিক ১৭।
এবার ঘুরে দাঁড়ানোর কারণ জানতে চাইলে যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বিশ্বাস শাহিন আহম্মেদ বলেন, যশোর শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নব্যাংক থেকে মানসম্মত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষা দেয়। এ কারণে বোর্ডের চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মুখোমুখি হওয়া তাদের জন্য সহজ হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে একধরনের সামাজিক জাগরণ সৃষ্টি করা হয়েছে। এটাও ফল ভালো হওয়ার একটি বড় কারণ।
মেয়েরা এগিয়ে
যশোর বোর্ডে এবারও ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ভালো ফল করেছে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, পাসের হার ও জিপিএ-৫—সব সূচকেই মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। এ বছর ১ লাখ ৬০ হাজার ৯২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮১ হাজার ৪৫৯ জন ছাত্রী ও ৭৯ হাজার ৪৫৭ জন ছাত্র। মেয়েদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ২৫ আর ছেলেদের ৯০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ১১ হাজার ৪৩১ জন মেয়ে পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। চার বছর ধরে এই শিক্ষা বোর্ডে মেয়েদের এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বিশ্বাস শাহিন আহম্মেদ বলেন, শ্রেণিকক্ষে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের উপস্থিতি বেশি। পড়াশোনায় তারা মনোযোগীও তুলনামূলক বেশি। তা ছাড়া মেয়েদের এগিয়ে দিতে অভিভাবকেরাও এখন বেশি সচেতন। সব মিলিয়ে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ভালো করছে।
সেরা জেলা সাতক্ষীরা
পাসের হার ও অন্যদিক বিবেচনায় যশোর শিক্ষা বোর্ডের শীর্ষে রয়েছে সাতক্ষীরা জেলা। এই জেলার শিক্ষার্থীদের পাসের হার ৯৬ দশমিক ১২। দ্বিতীয় অবস্থানে খুলনা ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যশোর জেলা।
শতভাগ পাস ৪২২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
যশোর বোর্ডের আওতায় এ বছর ২ হাজার ৫৬৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এর মধ্যে শতভাগ পাস করেছে ৪২২টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। যেখানে গত বছর এর সংখ্যা ছিল ১৯৩। এ বছর একজনও পাস করেনি, এমন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। গত বছরও তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাসের হার শূন্য ছিল।