নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে জেলা সদরসহ সারা দেশের নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। আজ বুধবার বেলা দুইটা থেকে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন চাকমা। তিনি বলেন, ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত চলছে। তাই নৌ যোগাযোগ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মাছ ধরার নৌকাগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করতে বলা হয়।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ ভোর থেকেই নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের কর্মকর্তা আরজুল ইসলাম বলেন, আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে।
সকাল থেকে বৃষ্টির প্রভাবে হাতিয়ার কিছু কিছু এলাকায় জলজট দেখা দেয়। সড়কে থাকা বিভিন্ন খানাখন্দেও পানি জমে গেছে। হঠাৎ বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েন খেটে খাওয়া মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব–মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা ঘূর্ণিঝড় দানা আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোতে পারে এবং ঘনীভূত হতে পারে।
আবহাওয়ার বার্তায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে।