কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা
কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে হামলায় আহত নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি সুলতান মারুফ তালহা বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ১৪ জন এজাহারনামীয় আসামি। অজ্ঞাতনামা আসামি ৫০ থেকে ৬০ জন।
এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটি ও ছাত্র অধিকার পরিষদের কয়েকজন নেতা-কর্মী রয়েছেন। এ হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী কুষ্টিয়া জেলা শাখা।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, রাতেই মামলার ৪ নম্বর আসামি প্রকৌশলী তৌহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে গতকাল গভীর রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কুষ্টিয়ার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা ও উপজেলা কমিটির চার নেতার সদস্যপদ বাতিলসহ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সংগঠনটি। অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব মুখলেছুর রহমান, জেলা শাখার সদস্য সুমন আহমেদ, সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব এস এম মুবাশ্বির মাহমুদ ও যুগ্ম সদস্যসচিব তালহা জুবায়ের (নাবিল)। এর মধ্যে মুখলেছুর, সুমন ও মুবাশ্বির হামলা মামলার আসামি।
বিষয়টি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সংগঠনটির কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভায় নেতাদের মতামত এবং আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই সংগঠনবিরোধী ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
এর আগে গতকাল রাত ৮টার দিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন জেলা কমিটির সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান, নাগরিক কমিটির সদস্য সুলতান মারুফ তালহা, আলভী, ইব্রাহিম, জুবায়ের, নয়ন, আলী আহসান, সোহান ও রেজোয়ান।
কুষ্টিয়া মডেল থানায় হওয়া মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গতকাল সন্ধ্যায় আসামিরা দেশি অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরের কাটাইখানা মোড়ে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে সমবায় মার্কেটে সম্প্রতি উদ্বোধন করা বুয়েট শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদের নামে গ্রন্থাগার ভাঙচুরের জন্য যান। এ সময় বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা আসামিদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁদের ধাওয়া দেন আসামিরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা সেখান থেকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের মাঠে অবস্থান নিলে সেখানেও আসামিরা হামলা চালান।